শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে ডিভিডেন্ড ঘোষনাকে সামনে রেখে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি একটু বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে। এছাড়া আর্থিক বছর সম্পন্ন হওয়ায় ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো। তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে বীমা খাতের শেয়ারে। আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের বড় উত্থান হলেও অধিকাংশ বীমা খাতের শেয়ারে দরপতন হয়েছে।

তাছাড়া দীর্ঘদিন মন্দা অবস্থায় থাকার পর চাঙ্গা প্রবণতায় ফিরতে শুরু করেছে দেশের শেয়ারবাজার। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার পর প্রতিদিনই সূচক যেমন বাড়ছে, তেমনি লেনদেনও বাড়ছে। শেয়ারবাজারে ফিরছে ছোট বড় সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা।

কিছুদিন আগে যেখানে মতিঝিলের ব্রোকারেজ হাউজগুলো ছিল রীতিমতো ফাঁকা, এখন ব্রোকারেজ হাউজগুলো ফের সরগরম হয়ে উঠছে। আনাগোনা বাড়ছে সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীদেরও। শেয়ারবাজার যেন আগের রমরমা অবস্থায় ফিরছে বলে মন্তব্য করেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফ্লোর প্রাইস যখন প্রত্যাহার করা হয়, তখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৪ হাজার ৩৬৬ পয়েন্ট। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর ডিএসইর সূচক ২৩৯ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯৭ পয়েন্টে নেমে যায়। তারপর বাজার ঘুরে দাঁড়ায়। প্রতিদিন সূচকে যোগ হতে থাকে নতুন নতুন পয়েন্ট এবং লেনদেনেও দেখা যায় নতুন গতি। আজ রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) ডিএসইর সূচক প্রায় ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে। এরফলে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের সময়ে সূচকে যোগ হয়েছে নতুন করে ১১১ পয়েন্ট।

সূচক উত্থানের ফলে ফ্লোর তোলার পর যেসব শেয়ারের পতন হয়েছিল, সেসব শেয়ারের দাম আগের অবস্থায় ফিরছে। ওরিয়ন ফার্মা, মিথুন নিটিংয়ের মতো কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ারদর এরই মধ্যে ফ্লোর প্রাইস টপকে লেনদেন হচ্ছে। তবে সূচকের এমন উত্থানে সবচেয়ে বেশি বেনিফিসারি ব্যাংক খাত। ব্যাংক খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।

এদিকে, সূচকের এমন উত্থানেও হতাশ ইন্সুরেন্স খাতের বিনিয়োগরীরা। কারণ ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর সূচকের যে পতন হয়েছে, সেই পতনে ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু সূচকের উত্থানে ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর শেয়ারে তেমন ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বরং সূচকের বড় উত্থানেও অনেক ইন্সুরেন্স কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। আজ সূচকের বড় উত্থানেও ইন্সুরেন্স খাতের ৫৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বেড়েছে। যে কারণে গত ৬-৭ দিন যাবত ব্যাংক খাতের শেয়ারে বড় র‌্যালী হচ্ছে। তাদের মতে, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে ব্যাংক খাতের শেয়ারে মুনাফা তোলা শুরু হতে পারে। তখন অন্যান্য খাতের শেয়ার অগ্রসর হবে। এছাড়া সামনে ইন্সুরেন্স খাতের ডিভিডেন্ড মৌসুম রয়েছে। ডিভিডেন্ডকে সামনে রেখে ইন্সুরেন্স খাতের শেয়ার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরবে। সেটি আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেও দেখা যেতে পারে।