শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজার কোন পথে হাঁটছে, এ প্রশ্ন এখন হাজার হাজার বিনিয়োগকারীদের। গত এক বছরের বেশি সময় বাজারের অস্থির আচরনে বাজার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। তাছাড়া সরকার সহ নীতি নির্ধারকরা পুঁজিবাজার নিয়ে আন্তরিক হলেও কিছুতেই ঘুরে দাঁড়াতো পারছে না। বরং বাজার আজ ভাল তো কাল খারাপ। এ অবস্থার মধ্যে দিনের পর দিন অতিবাহিত হচ্ছে।

এদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন চূড়ান্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বন্ড, ডিবেঞ্চার বা ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক নিদর্শনপত্রে বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগ কোষের (পোর্টফোলিও) বাইরে রাখা হয়েছে। এমন নানা পজেটিভ খবরে কোন বাজার ঘুরে দাঁড়াতো পারছে না। এই প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের। কারা পরিকল্পিত ভাবে পুঁজিবাজারকে ধস নামাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত।

এছাড়া দেশের অর্থনীতির সব সূচক যখন ওপরের দিকে উঠছে ঠিক একই সময়ে নিচের দিকে নামছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজারের সূচক। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আগের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কেন কমছে। কোন কারণ ছাড়াই যেন বাজারে মন্দাবস্থা আগের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। বিমা, খাদ্য এবং ওষুধসহ সব খাতের শেয়ারের দাম কমায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ৯ দশমিক ৪ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ১৭ দশমিক ৯০ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম। তবে ডিএসইতে বেড়েছে কিছুটা লেনদেনের পরিমাণ। এর ফলে টানা তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজারে দরপতন হলো।

ডিএসইর তথ্য মতে, আজ বাজারে ৩৪০টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১৩ কোটি ৫০ লাখ ৯৭ হাজার ৮৯৮ শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এতে লেনদেন হয়েছে ৬৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬২৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯.০৪ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৩২৪.৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১.০৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১.৭০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৭০.৯২ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ১৫৭.৪০ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ ৩৪০টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫৪টির বা ১৫.৮৮ শতাংশের। এছাড়া দর কমেছে ১১৩টির বা ৩৩.২৩ শতাংশের এবং শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৩টির বা ৫০.৮০ শতাংশের। আজ ডিএসইতে ৬৬৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬২৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকার।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭.৯০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৮৩.৪৩ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলো মধ্যে সিএসসিএক্স ১১.০৮ পয়েন্ট, সিএসই-৫০ সূচক ০.১৪ পয়েন্ট ও সিএসআই ০.১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ১৬৭.৯৬ পয়েন্টে, একহাজার ৩১২.৪৭ পয়েন্টে ও ১ হাজার ১৭১.৮৩ পয়েন্টে। তবে সিএসই-৩০ সূচক ১৭.১১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৫৭.৫৬ পয়েন্টে।

সিএসইতে আজ ১৬০টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ৬৯টির এবং ৫১টি কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে। আজ সিএসইতে মোট ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।