শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: রাষ্ট্রায়াত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে যাতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পুঁজিবাজারে সাপোর্ট জোরদার হচ্ছে। এই লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি গত ১৭ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বার্ষিক কর্মক্ষমতা চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর করেছে।

চুক্তি অনুসারে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পুঁজিবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা, পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ জোরদার করতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মার্জিন ঋণ হিসাবে ৩৫০ কোটি টাকা বিতরণ করা এবং প্রতিদিন অন্তত ২০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের টার্নওভারে বৃদ্ধিতে অবদান রাখা।

পুঁজিবাজারের মন্দা, তারল্য সংকট এবং রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য স্টক মার্কেটের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতাসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কারণে আইসিবির স্টক মার্কেট বিনিয়োগ আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫০ শতাংশ কমে ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা হয়েছে। এর আয়ও ৪৯ শতাংশ কমে ৭১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা হয়েছে।

এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি মার্জিন ঋণ হিসাবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ৩৮১ কোটি টাকা বিতরণ করেছে এবং গত অর্থবছরে ৩৮২ কোটি টাকা আদায় করেছে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় যথাক্রমে ৬৩ শতাং এবং ৭২ শতাংশ কম।

পুঁজিবাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য, আইসিবি দশ বছরের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ পাওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সফট লোন হিসেবে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা চেয়েছে।

আইসিবির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবু তাহের মোহাম্মদ আহমেদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করছি। এ কারণে আমাদের তহবিলের ব্যয় অনেক বেশি। আর এভাবে চলতে থাকলে কোম্পানির শেয়ারবাজারকে সমর্থন করার কোনো সক্ষমতা থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে স্বল্প সুদে ঋণ চেয়েছি কারণ এই সময়ে আমাদের স্বল্প খরচে দীর্ঘমেয়াদী তহবিল দরকার। সরকারও আমাদের সমর্থনে আন্তরিকতা দেখিয়েছে। তাই, আমরা ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’

আইসিবি সূত্রে জানা যায়, কর্পোরেশন নিজেদের স্বার্থ বিবেচনা না করে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল ও নিজস্ব তহবিলের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে সহায়তা করে আসছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকগুলো ক্রমাগত পতনের মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় বাজারকে সাপোর্ট দিতে বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ সুদে ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে আইসিবি। ফলে তহবিলের ব্যয় বেড়েছে। আইসিবি ঋণের বিশাল সুদ ত্রৈমাসিক পরিশোধ করছে।

আহমেদুর রহমান বলেন, ‘স্টক মার্কেট থেকে আয় যাই হোক না কেন আমাদের নিয়মিত সুদ দিতে হবে। শুধুমাত্র স্বল্পমূল্যের তহবিলই এখন আমাদের বাঁচাতে পারে।’ সরকার ১৯৭৬ সালে শেয়ারবাজারে অর্থায়নের জন্য আইসিবি গঠন করে। কর্পোরেশন বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে একটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেসরকারি খাতে অর্থ ঋণ দেয়।