শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের কিছুটা উত্থান হলেও বিশাল ব্যবধানে লেনদেন কমেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় সপ্তাহজুড়ে লেনদেন কমেছে ৯১১ কোটি ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৩ টাকা। তবে লেনদেন কমলেও সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন (পুঁজি) বেড়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। সপ্তাহজুড়ে বাজার বিশ্লেষণে এ চিত্র দেখা গেছে।

সপ্তাহের মধ্যে তিন কার্যদিবস উত্থান আর দুই কার্যদিবস দরপতনের মধ্যে দিয়ে জুন মাসের আরও এক সপ্তাহ পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে দাম কমার বিপরীতে বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে বেড়েছে সূচক। এদিকে টানা দুই সপ্তাহ পতনের পর গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে তার সাত গুণ।

এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব কয়টি মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধন। তবে কমেছে লেনদেনের গতি। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে সাড়ে ২৩ শতাংশ। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে প্রায় এক শতাংশ। আর বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার কোটি টাকা।

দাম বাড়ার তালিকা বড় হলেও গত কয়েক মাসের মতো তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতাসংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়েও। ফলে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

ডিএসইর তথ্যমতে, ১৮ জুন সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৯ কোটি ১৮ লাখ ৩৯ হাজার ৮৫৪ টাকা। আর শেষ দিন বৃহস্পতিবার (২২ জুন) লেনদেন শেষে মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫২৯ কোটি ৪ লাখ ৫ হাজার ২৮২ টাকা। অর্থাৎ টাকার অঙ্কে পুঁজি ফিরেছে ১ হাজার ৯৯৯ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার ৪২৮ টাকা। এর ফলে টানা দুই সপ্তাহের মূলধন সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা হারানোর পর বিদায়ী সপ্তাহে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার পুঁজি ফিরে পেলেন বিনিয়োগকারীরা।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬২টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩টির। এ ছাড়া ২০৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৯ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ পতনের পর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ল। প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ।

ইসলামি শরিয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহে বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি ১৩ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে।

সব কটি মূল্যসূচক বাড়লেও লেনদেনের গতি কমে গেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৯১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৭৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৮২ কোটি ২৩ লাখ টাকা বা ২৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

সর্বশেষ সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৯৫৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৩ হাজার ৮৬৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৯১১ কোটি ১৪ লাখ টাকা বা ২৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ।