শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই আরো এক সুস্থ, সুন্দর, সাসটেইনেবল, ট্রান্সপারেন্ট পুঁজিবাজার আপনারা দেখতে পাবেন। তবে পুঁজিবাজারে এক হাতের টাকা অন্য হাতে যায়। আর বিনিয়োগকারীদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে ট্র্যাপ (ফাঁদ) তৈরি করে গুজব ছড়ানো হয়। তাই গুজবে কান দেওয়া যাবে না।

আজ শনিবার সিলেটে বাংলাদেশ একাডেমি ফর ক্যাপিটাল মার্কেটস (বিএএসএম) এবং ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এনবিআরের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সকল সমস্যার সমাধান করছি। তাই এই সংক্রান্ত যে সমস্যাগুলো ছিলো তা দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে। বৈশ্বিক অর্থনীতির চাপের কারণে দেশের এক্সচেঞ্জ রেট কিছুটা বেড়েছে। দুই-এক মাসের মাঝেই আশা করা যায় কারেন্ট ব্যালেন্স লেভেলে আসবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, বর্তমান সময়ের মূল উদ্দেশ্য হলো কর্মসংস্থান। তাই সব সময় বলি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের একমাত্র উৎস পুঁজিবাজার। তেলসহ সকল আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে। এরপরেও দ্বিতীয় বৃহত্তর পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশ। সিলেট বিভাগ স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকেই বাংলাদেশের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বা অবদান রেখেছে।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে জ্ঞানবুদ্ধি থাকা সত্ত্বেও ১০ থেকে ২০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এখানে আপনার সম্পূর্ণ টাকা চলে যাবে না। কিন্তু অন্য সেক্টরে এখনও এ ভয়টি আছে। সুতরাং শিক্ষা, জ্ঞান, বুদ্ধি ব্যববহার করে আপনারা ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারেন। এখানে কিন্তু বিনিয়োগ করে হাইয়েস্ট রিটার্ন পাওয়ার অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখানে এতো অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট করার সুযোগ রয়েছে যে, আপনারা বিনিয়োগ করে বেটার রেজাল্ট পেতে পারেন।

তিনি বলেন, আমাদের বিনিয়োগ যদি এখন ৬ থেকে ৭ শতাংশ রিটার্নে কোথাও বিনিয়োগ করেন, তাহলে ইনফ্লেশনের প্রেশারে সেটা আসলে আস্তে আস্তে আপনার টাকার মূল্য কমতে থাকবে। সুতরাং আপনাকে বিনিয়োগ করতে হবে ইনফ্লেশন রেটের উপরে। ইনফ্লেশন রেটের উপরে বিনিয়োগ করলে এ মুহূর্তে সঞ্চয়পত্র একটি জায়গা। সেখানে রেটটা একটু হাই। এছাড়া গভমেন্ট ট্রেজারি বন্ড বা ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। আর এটা কিন্তু ক্যাপিটাল মার্কেট প্রোডাক্টের মধ্যেই রয়েছে।

তিনি বলেন, আজকের আয়োজনে আপনাদের উপস্থিতি আমাদেরকে আরো এনকারেজমেন্ট দিচ্ছে। আমরা এখন জেলায় জেলায় যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে আমরা বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব মানুষকে বুঝানো শুরু করেছি। সেই সঙ্গে আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে আরো বেশি বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে। আশা করি আপনারা আরো বেশি বিনিয়োগ করবেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) এর চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স আ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি তাহমিন আহমদ। প্রথম অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এরপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

এছাড়া বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমানের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিএএসএম এর মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, ডিএসই’র পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, সিএসই’র পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স আ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান।