শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ সালভো কেমিক্যাল শীর্ষ লেনদেন তালিকায় সবাইকে টপকে শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে। ডিএসইতে আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৪ লাথ ৮১ হাজার ৪৬৯টি। যার বাজার মূল্য ৪০ কোটি ১০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

ডিএসইতে লেনদেনের দ্বিতীয় শীর্ষ কোম্পানি ইন্ট্রাকো সিএনজির লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৮৫ লাখ হাজার টাকা এবং তৃতীয় শীর্ষ কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন-বিএসসির লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৩২ লাখ ৯৮০ হাজার টাকা। আজ ডিএসইতে ব্লক মার্কেটেও সালভো কেমিক্যাল শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩২ লাখ ১৬ হাজারের বেশি। যার বাজার মূল্য ছিল ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বেশি।

হঠাৎ করে কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, তিন বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড বেড়েছে ১০ গুণ। আর মুনাফা বেড়েছে ৬৬ গুণ। ডিভিডেন্ড ও আয় বৃদ্ধির কারণে কোম্পানিটির শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারীদের নজর বেড়েছে। বড় বিনিয়োগকারীদের নজর বাড়ায়ণে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন পাবলিক মার্কেটে ও ব্লক মার্কেটে গত দুই বছরের মধ্যে আজ (রোববার) রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে কোম্পানিটির কয়েকটি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ থাকায় হঠাৎ আয়ে ভাটা নামে। এরপর ২০২০ সালের শেষ দিকে বন্ধ থাকা ইউনিটগুলো চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর উৎপাদন শুরু হলে ২০২১ সাল থেকে কোম্পানিটির মুনাফা বাড়তে শুরু করে। যার কারণে তিন বছরের মাথায় কোম্পানিটির মুনাফা ও ডিভিডেন্ডে গতি ফিরে আসে।

কোম্পানিটির ভালো আয় করায় বিনিয়োগকারীদের ভালো রিটার্ণও দিতে শুরু করেছে। ভালো রিটার্ণ দেওয়ায় কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে বড় বিনিয়োগকারীদের নজর পড়েছে। যার কারণে এই কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে বড় বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও।

২০২০ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ০৩ পয়সা। ২০২১ সালে ইপিএস বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ পয়সায়। অর্থাৎ আগের বছরের তুলোনায় কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১০ গুণ। আর ২০২২ সালে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৯৮ পয়সা। যা আগের বছরের চেয়ে আরও প্রায় ছয় গুণ বেশি।

২০২০ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাাঁড়ায় দ্বিগুণ বা ২ শতাংশে। আর ২০২২ সালে সেই একই কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। যা আগের বছরের তুলোনায় ৫ গুণ বেশি। একই সময়ে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্যও বেড়েছে ক্রমাগতভাবে। ২০২০ সালে এনএভি ছিল ১২ টাকা ৪৬ পয়সা। ২০২১ সালে এনএভি দাঁড়ায় ১২ টাকা ৬৯ পয়সায়। আর ২০২২ সালে দাঁড়ায় ১৪ টাকা ৫৮ পয়সা।

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২২) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় দেখিয়েছে ৬৩ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫৫ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলোনায় কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ০৮ পয়সা বা ১৪.৫৪ শতাংশ।

বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকা কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরও বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার ছিল ৮.৬৯ শতাংশ। অক্টোবর মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮.৭৩ শতাংশে। অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.০৪ শতাংশ।

অন্যদিকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৬৬.০৩ শতাংশ শেয়ার। আর উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে মাত্র ২৫.১৮ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ৩০ শতাংশে উন্নীত করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি প্রচন্ড চাপে রেখেছে।