শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আলাদিনের চেরাগের মতো পুঁজিবাজারের মাধ্যমেও রাতারাতি বড় লোক হওয়া যায়, সেই কল্পিত কথাই যেন সত্যি করে দেয়ার ব্রত নিয়েছে পুঁজিবাজারের ১০ কোম্পানি। গত তিন মাসের মধ্যেই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে কোনটার ছয় গুনের বেশি। এখন পুঁজিবাজারে ১০ কোম্পানি ২০২২ সালে আলাদিনের চেরাগে পরিনত হয়েছে।

এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে কেউ কেউ ছয় গুনের বেশিও মুনাফা করছেন। বর্তমানে এ ১০ কোম্পানির শেয়ার তর তর করে আকাশে উঠছে। অন্যদিকে সিংহভাগ শেয়ার পতনের ক্রমাগত চাপে ফ্লোর প্রাইসের অচলায়তনে মিলিত হচ্ছে। যে শেয়ারগুলো আকাশে উঠছে সেগুলোর চাহিদা ও শেয়ার দাম কারসাজি করে আকাশচুম্বী করে তোলা হচ্ছে। শেয়ারগুলো দামে ও লেনদেনে চমকের পর চমক দেখাচ্ছে।

এই কোম্পানিগুলোর গন্তব্য কোথায়? প্রশ্ন বাজার সংশ্লিষ্টসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। এছাড়া সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলছে দশ কোম্পানির শেয়ারদর। একাধিকবার ডিএসই থেকে সতর্ক করার পরও লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরের।

আবার যেগুলো পতনের যাতনায় বিবর্ণ অবস্থায় কাবু হয়ে গেছে, সেগুলো চাহিদাহীন বিমর্ষ অবস্থায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। শেয়ারগুলো সপ্তাহের পর সপ্তাহ ক্রেতা সংকটে পড়ে যেন নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাচ্ছে। আজ পুঁজিবাজারের কারসাজির কবলে থাকা ১০ কোম্পানির শেয়ার এ যাবতকালের মধ্যে সেরা চমক দেখিয়েছে। কোম্পানিগুলোর প্রায় সবই পুঁজিবাজারে আসার পর আজ সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হওয়ার রেকর্ড গড়েছে।

বড় উত্থান-পতনের দৃশ্যায়নে সাম্প্রতিককালে কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আলোচনার প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে ওঠে এসেছে। কোম্পানিগুলো হলো: ওরিয়ন ইনফিউশন, শাইনপুকুর সিরামিক, মেট্রো স্পিনিং, জেএমআই হসপিটাল, ইস্টার্ন হাউজিং, বসুন্ধরা পেপার, এডিএন টেলিকম, ইন্ট্রাকো সিএনজি, বিবিএস ও কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ।

ওরিয়ন ইনফিউশন: বর্তমানে শেয়ারবাজারে সবচেয়ে আলোচিত কোম্পানির নাম ওরিয়ন ইনফিউশন। কোম্পানিটির শেয়ার অতি অল্প সময়ের মধ্যে শেয়ারবাজারে সর্বোচ্চ দাম হাঁকানোর শিরোপা পেয়েছে। আলাদিনের জাদুর ছোঁয়ায় শেয়ারটির দাম গত বছরের ৮ জুন থাকা ৬৮ টাকা থেকে বর্তমানে ৬১৮ টাকার ওপরে উঠেছে। এক বছর চার মাসেরও কম সময়ের মধ্যে শেয়ারটির দাম বেড়েছে ৮০৮ শতাংশের বেশি।

গত বছরের জুন থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত দফায় দফায় কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজি হয়েছে। তবে চলতি বছরের ৩০ জুন থেকে শুরু হয় কারসাজির মূল্য উপাখ্যান। সেদিন শেয়ারটির দাম ছিল ৮৭ টাকা। তারপর টানা উত্থান। কখনো কখনো টানা তিন-চার দিন ক্রেতা সংকটের দৃশ্যায়নও দেখা গেছে। দুই মাসের ব্যবধানে আজ (রোববার) কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৬২৭ টাকা ৯০ পয়সায়। দিনশেষে ক্লোজিং হয়েছে ৬১৮ টাকা ৫০ পয়সায়। যা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ।

গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৪৩ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা। সর্বশেষ দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়িয়েছে ৩২৪ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট।

শাইনপুকুর সিরামিকস: দুই বছর আগে ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারের দাম ছিল ১৪ টাকা ৬০ পয়সা। তারপর ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে শেয়ারটির দাম তোলা হয় প্রায় আড়াইগুন, ৩৬ টাকায়। তারপর ক্রমাগত ডাম্পিং সেল। চার মাসের মাথায় ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল টেনে নামানো হয় ১৮ টাকা ৭০ পয়সায়।

সেখান থেকে আবারও উত্থান। সাড়ে পাঁচ মাসের মাথায় আবারও আড়াইগুন দাম বৃদ্ধি হয়ে ওঠে যায় ৪২ টাকা ৫০ পয়সায়। সেখান থেকে বিক্রির চাপ দিয়ে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল নামানো হয় ২৫ টাকার নিচে। এরপর ২৮ জুন থেকে টেনে তোলা হয় ৫৪ টাকায়। তারপরও ফের পতন। নামানো হয় ৪২ টাকার নিচে। তারপর এবারের উত্থান পর্ব। ধারাবাহিকভাবে টেনে আজ তোলা হয় ৫৮ টাকা ৩০ পয়সায়। যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি আড়াই শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস ২৭ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১৪ পয়সা। সর্বশেষ শেয়ার দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়িয়েছে ১৫৫ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট।

মেট্রো স্পিনিং: বছরজুড়ে কারসাজির আরেক আলোচিত শেয়ার মেট্রো স্পিনিং। ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল শেয়ারটির দাম অভিহিত মূল্যের নিচে ৭ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এরপর শেয়ারটিতে যেন আলাদিনের চেরাগ পড়ে। মাত্র সাড়ে চার মাসের কম সময়ের মধ্যে ২৬ আগস্ট শেয়ারটির দাম ৫ গুন বাড়িয়ে ৩৫ টাকায় তোলা হয়।

তারপর পতন ঘটিয়ে পরবর্তী চার মাসের মাথায় ২০ টাকার নিচে নামানো হয়। এরপর পরবর্তী এক মাসের মধ্যে ২৮ টাকায় তোলা হয়। ফের চার মাসের মাথায় ২০ টাকার নিচে নামানো হয়। পরের মাসে ৩০ জুন ২৮ টাকায় লেনদেন হয়। এরপরের মাসে ২৩ টাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। সেখান থেকে বর্তমান কারসাজি শুরু। আজ শেয়ারটির দাম ৫১ টাকা ৪০ পয়সায় তোলা হয়। যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম।

গতবছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ৬২ পয়সা। সর্বশেষ দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়িয়েছে ৩৮ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে।

ইন্ট্রাকো সিএনজি: মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে শেয়ারটির দাম ১৪ টাকা থেকে আজ ৪৮ টাকা ৮০ পয়সায় উঠেছে। শেয়ারটির এই দাম শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ। গত কিছুদিন ধরে শেয়ারটির দামে ও লেনদেনে অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের অবতারণা হয়েছে। বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, দেশের বড় একটি শিল্প গ্রুপের হাতের ছোঁয়ায় এই শেয়ারটি হঠাৎ ঝলসে উঠেছে।

গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি ২ শতাংশ নগদ ও ৮ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস ৭৩ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ৫৯ পয়সা। সর্বশেষ শেয়ার দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট।

জেএমআই হসপিটাল: চলতি বছরের ৩১ মার্চ জেএমআই হসপিটাল শেয়ারবাজারে লেনদেনে আসে। লেনদেনের প্রথম দিন থেকে টানা দৌড় মেরে ৭৫ টাকায় বিরতি নেয়। এরপর কিছুটা পেছনে ফেরে তাকায় শেয়ারটি। ৬৭ টাকার নিচে গিয়ে ফের দম নিতে থাকে।

এখানে শক্তিমত্তা সঞ্চয় করে ফের ওপরে ওঠা শুরু করে। একটানা দাম বেড়ে ৯৫ টাকায় নিঃশ্বাস ফেলে। তারপর সেল প্রেসারে যথারীতি ফের পেছনে যাত্রা। যা ৬৮ টাকার ঘরে এসে স্থির হয়। এই সময়ে ফ্লোর প্রাইসে বেশ কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে দেখা যায় শেয়ারটিকে। সেখান থেকেই বর্তমান উত্থান পর্বের সূত্রপাত। একটানা দাম বেড়ে আজ ১৪২ টাকা ৮০ পয়সা ছুঁয়েছে। যা শেয়ারবাজারে আসার পর সর্বোচ্চ দাম।

তবে দিনশেষে দাম স্থির হয়েছে ১৩৪ টাকা ৩০ পয়সায়। বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, শেয়ারবাজারের আলোচিত জুয়াড়ি আবুল খায়ের হিরুর কারসাজিতে শেয়ারটি জ্বলে উঠেছে।

আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস ২ টাকা ৮৯ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৭০ পয়সা। সর্বশেষ শেয়ার দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট।

ইস্টার্ন হাউজিং: ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দাম ছিল ৪০ টাকার নিচে। ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর শেয়ারটির দাম ওঠে ৬৫ টাকায়। তারপর ২৬ ডিসেম্বর ৪৭ টাকার নিচে নেমে যায়। এক মাস পর ৩০ জানুয়ারি ওঠে যায় ৬২ টাকায়। ছয় মাসের মাথায় ৫২ টাকার নিচে নেমে যায়। এখান থেকে বর্তমান উত্থান পর্ব শুরু। ধারাবাহিক উত্থান-পতনের খেলা জমিয়ে আজ ১২২ টাকা ৮০ পয়সায় তোলা হয়। যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

কোম্পানিটি ইতোমধ্যে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ৩০ জুন-২০২২ অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ লভ্যাংশের এই ঘোষণা দেয়। সেদিন শেয়ারটির দাম ছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। আজ ১২২ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। সর্বোচ্চ লেনদেন হাঁকিয়ে দিনশেষে পতনের ধারায় ফিরে ক্লোজিং প্রাইস হয়েছে ১১২ টাকায়।

এডিএন টেলিকম: ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর এডিএন টেলিকম শেয়ারের দাম ছিল ৩৫ টাকার নিচে। সেখান থেকে তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে ৩ জানুয়ারি শেয়ারটির দাম তোলা হয় ৬৫ টাকায়। তারপর তিন মাসের মাথায় ৩ এপ্রিল নামানো হয় ৩৮ টাকায়।

এরপর পাঁচ মাসের মধ্যে কারসাজি করে তোলা হয় ৮১ টাকায়। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ফেলা হয় ৫০ টাকার নিচে। পরের তিন মাসে অর্থাৎ ৯ মে উঠানো হয় ৮০ টাকায়। তারপর ফের পতন। আনা হয় ৫৭ টাকার নিচে। সেখান থেকে বর্তমান কারসাজির সূত্রপাত।

আজ ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। যা তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ। আগের দিন বৃহস্পতিবার ৮৮ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন করে সর্বোচ্চ রেকর্ডের মুকুট মাথায় পরেছে।

গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭৭ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৭৬ পয়সা। সর্বশেষ দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে।

বিবিএস: এক বছর আগে ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর বিবিএস শেয়ারের দাম ছিল ১৬ টাকা। তিন মাসের মাথায় চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি শেয়ারটির দাম ওঠে ৩০ টাকায়। তার পরের মাসে ৭ মার্চ নামানো হয় ২১ টাকায়। পরের সপ্তাহের ১৫ মার্চ তোলা হয় ২৭ টাকায়। তারপর ডাম্পিং সেল। ২৮ জুলাই নামানো হয় ২১ টাকার নিচে। সেখান থেকে বর্তমান উত্থান পর্বের সূত্রপাত।

ধারাবাহিক উত্থানের পর আজ শেয়ারটির দাম তোলা হয় ৩৩ টাকা ৮০ পয়সায়। শেষবেলায় রাখা হয় বিক্রেতা সংকটে। আজকের দাম শেয়ারটির গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪২ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১০ পয়সা। সর্বশেষ শেয়ার দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে।

বসুন্ধরা পেপার: ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর বসুন্ধরা পেপারের শেয়ারের দাম ছিল ৪০ টাকার নিচে। সাত মাস পর ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর শেয়ারটির দাম ওঠে ৫৬ টাকায়। তারপর ধারাবাহিক সংশোধন। চলতি বছরের ৭ মার্চ নেমে আসে ৪৮ টাকার নিচে। এই দামে ২৮ জুলাই পর্যন্ত ওঠা-নামা করে।

সেখান থেকে বর্তমান উত্থানের পর্ব শুরু হয়। ধারাবাহিক উত্থান হয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর ৭৩ টাকার ওপরে ওঠে যায়। এরপর কিছুটা সংশোধন হয়ে ৬৬ টাকার ঘরে নেমে আসে। তারপর চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার খবরে শেয়ারটির দাম ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়। টানা বেড়ে আজ ৯৬ টাকায় ওঠে। দিনশেষে ক্লোজিং হয় ৯৩ টাকা ৫০ পয়সায়। এটি কোম্পানিটির শেয়ারবাজারে আসার পর সর্বোচ্চ দাম।

গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪৯ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ১৫ পয়সা। সর্বশেষ শেয়ার দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ৪৭ দশমিক ০৬ পয়েন্টে।

কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ: ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল কপারটেক শেয়ারের দাম ছিল ১৮ টাকার নিচে। সেখান থেকে চার মাসের মাথায় ২ সেপ্টেম্বর শেয়ারটির দাম তোলা হয় ৪৬ টাকায়। তারপর তিন মাসের মাথায় ১২ ডিসেম্বর নামানো হয় ৩১ টাকায়। এরপর দেড় মাসের মাথায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি তোলা হয় ৪৬ টাকার ওপরে।

তারপর এক মাসের মাথায় ৭ মার্চ ৩১ টাকায় নামানো হয়। এরপর ২৮ জুলাই পর্যন্ত শেয়ারটির দাম ৩৮ টাকার নিচে ঘুরাফিরা করে। সেখান থেকে চতুর্থ দফা উত্থান পর্বের সূত্রপাত। টানা দাম বাড়িয়ে আজ তোলা হয় ৫২ টাকা ৮০ পয়সায়। যা শেয়ারবাজারে আসার পর কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম।

গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪৯ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ৭৮ পয়সা। সর্বশেষ শেয়ার দামের ভিত্তিতে শেয়ারটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ২২ পয়েন্টে।