শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আজিজ পাইপস লিমিটেডের উৎপাদন গত বছরের জানুয়ারী থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে বন্ধ থাকলেও প্রতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে উৎপাদন চালুর তথ্য পিএসআই আকারে প্রকাশ করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তবে অক্টোবর মাস আসলে উৎপাদন চালু খবরে প্রকাশ করে কোম্পানিটি বেশী দরে শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।

গত বছর ২০২১ সাল কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ১লা অক্টোবর থেকে উৎপাদনে ফিরেছে কোম্পানিটি। কিন্ত উৎপাদনে ফেরার বিষয়টি সঠিক নয় বলে তথ্য পাওয়া গেছে তৎসময়ে আজিজ পাইপের শীর্ষ এক ডিলারের কাছ থেকে। যদিও কোম্পানিটি ডিএসইকে জানিয়েছে তারা উৎপাদনে ফিরেছে। তাহলে কি উৎপাদনের বিষয়টি নিয়ে লুকোচুরি করছে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ।

এবছর ১ লা অক্টোবরে উৎপাদনে ফিরছে এমন তথ্য পিএসআই আকারে প্রকাশ করে আজিজ পাইপস কর্তৃপক্ষ। আসলে উৎপাদনে ফেরার কতটুকু সত্য তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাছাড়া আজিজ পাইপের উৎপাদন চালুর তথ্য গোপন রাখার অভিযোগ তুলছেন একাধিক বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া বন্ধ থাকা একটি কোম্পানি মাত্র ৫ দিনে কি ভাবে চালু করা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তাছাড়া উৎপাদন চালু কতে কোম্পানিটির কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে। তারা খবরটি তাদের ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছে। ঘনিষ্ঠরা শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে শেয়ার দরবৃদ্ধির পেছনে আজিজ পাইসের কর্র্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টরা রয়েছে। আরও সাধারণ বিনিয়োগকারী কাছে বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের উচিত এই কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

গত ১২ সেপ্টেম্বর আজিজ পাইপসের শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৯৬ টাকা। সর্বশেষ সোমবার লেনদেন হয় ১২৬ থেকে ১৪৭ টাকা পর্যন্ত উঠানামা করে। তবে ১২-২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কারখানা চালুর গোপন খবরে আজিজ পাইপসের শেয়ারের দাম ১৪৭ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।

১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি লোকসান কাটাতে গত বছরের ৮ নভেম্বর কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। কোম্পানিটির ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল, ব্যাংক লোন জটিলতা, আর্থিক সংকট কাঁচামাল এবং মূলধনের সংকটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজিজ পাইপসের মোট শেয়ার সংখ্যা ৫৩ লাখ ৪৭ হাজার ১২৫টি। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৭৭ দশমিক ৭ শতাংশ। আর পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার।

করোনার সময় থেকে লোকসানে পতিত হওয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০২১ সাল থেকে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। তিন প্রান্তিকে আজিজ পাইপসের শেয়ার প্রতি লোকসান ১ টাকা ৯৩ পয়সা।