শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) ডিএসই দিনভর সূচকের নানা নাটকীয়কতার পর দিন শেষে শেয়ার ক্রয়ের চাপে সূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিনভর সূচক ওঠানামা শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৯ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৮৪ পয়েন্ট। এর ফলে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কর্মদিবস রোববার ও সোমবার দরপতনের পর আজ সূচকের উত্থান হলো। তবে তার আগে টানা ছয় কর্মদিবস উত্থান হয়েছিল।

এদিকে শেয়ার বিক্রির চাপে টানা গত দু’কার্যদিবস দরপতনের পর পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান হয়েছে। সূচকের এমন উঠানে সর্বোচ্চ অবদান ছিলো চার কোম্পানির। এই চার কোম্পানির অবদানে আজ ডিএসইর সূচকের উত্থান হয়েছে ২৯.৩৭ পয়েন্ট। এই চার কোম্পানির মধ্যে রয়েছে বিকন ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড। তবে ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারে আগ্রহ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। আজ ওষুধ ও রসায়ন খাতের বিনিয়োগকারীরা ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন।

তবে দুই কার্যদিবসের দর সংশোধন শেষে পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হঠাৎ করে যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে সেটি স্পষ্ট লেনদেনে। টানা সাত কর্মদিবস পৌনে দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে লেনদেন সোমবারই নেমে গিয়েছিল দেড় হাজার কোটির নিচে। সেটি আরও কমল সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে মঙ্গলবার।

১৩ কর্মদিবসের মধ্যে ১২দিন সূচক বেড়ে বিনিয়োগকারীরা যখন গত ১০ মাসের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশায়, এমন পরিস্থিতিতে রোববার লেনদেনের অর্ধেক সময় পর্যন্ত সূচক ৭৮ পয়েন্ট বেড়েও পরে বেলা শেষে ১৮ পয়েন্ট পতন সাধারণ সংশোধন ছিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এর মধ্যে ফ্লোর প্রাইসের গুজব রটে সপ্তাহের দুই কার্যদিবসে বড় দরপতন ঘটে। এরই নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে ফ্লোর প্রাইসের বিষয় স্পস্ট জানানো হয়, অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্লোর প্রাইস চলবে এমন ঘোষণা আসার পর কিছুটা হলেও ফ্লোর ইস্যুতে আতঙ্কে কাটে বিনিয়োগকারীদের।

এছাড়া তফশিলী ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে আরও পরিস্কার নির্দেশনা দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সক্ষমতা বেড়েছে। এমন প্রজ্ঞাপন সোমবার রাত থেকে ফেসবুক ও অনলাইন পোর্টালগুলো প্রকাশের পর থেকে আস্থা বাড়ে বিনিয়োগকারীদের।

এদিকে দিনভর সূচকের ওঠানামা শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৯ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৮৪ পয়েন্ট। এর ফলে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কর্মদিবস রোববার ও সোমবার দরপতনের পর আজ সূচকের উত্থান হলো। তবে তার আগে টানা ছয় কর্মদিবস উত্থান হয়েছিল।

ডিএসইর তথ্য মতে, মঙ্গলবার ডিএসইতে ২৫ কোটি ৬৫ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৭টি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার মূল্য ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি ৬৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৭টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে ১২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৪৬টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৯.৬৫ পয়েন্ট বা ০.৬১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৭০.৯৯ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৪.২৪ পয়েন্ট বা ১.০১ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২০.৬৭ পয়েন্ট বা ০.৯০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৪১৮.৮২ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩০৬.৪৬ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন ১ হাজার ৩১৫ কোটি ০৪ লাখ টাকার। যা আগের দিন থেকে ৮৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৪০০ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। ডিএসইতে আজ ৩৬৭ টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১২৭ টির বা ৩৪.৬১ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১৪৬ টির বা ৩৯.৭৬ শতাংশের এবং ৯৪ টির বা ২৫.৬১ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৪.৬৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৯৮৮.৮৬ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২৬১ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৫ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২১ টির আর ৪৫ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।