শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ হিসাব এখন থেকে বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে করা হবে। এর ফলে পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম যতই বাড়ুক, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়বে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত আলাদা দুটি জারির পর থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। এদিকে পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচক ও উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে।

আজ বড় মূলধনী কোম্পানির উত্থানে সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। মুলত লাফার্জহোলসিম, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, তিত্যাস গ্যাস এবং বিকন ফার্মাসহ বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২০ পয়েন্ট। তবে সূচক বাড়লেও কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন। এর ফলে পুঁজিবাজারে টানা চার কার্যদিবস সূচকের উত্থান হলো।

একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তরিকতার ফলে পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে হাঁটছে। গত সপ্তাহে তৃতীয় কার্যদিবস উত্থানের পর আজ সপ্তাহের শুরুতে সূচকের কিছুটা উত্থানে পুঁজি হারা বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হতে শুরু করছেন। এছাড়া বাজার ধীরে ধীরে সূচক ও লেনদেন বাড়া বাজারের জন্য ইতিবাচক দিক।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী কাজী হোসাইন আলী বলেন, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ব্যাংকের আচরনে যারা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তারা বর্তমান গর্ভনরের আন্তরিকতার ফলে বাজারমুখী হতে শুরু করছেন। এছাড়া পুঁজিবাজার ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোভাব পরিবর্তন হওয়ায় এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোন মনোভাবও পরিবর্তন হচ্ছে।

নিস্কিয় হয়ে পড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে বাজারমুখী হতে শুরু করেছে। যে কারণে সূচক ও লেনদেনও ধীরে ধীরে চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান বাজারের এ ধারা অব্যাহত থাকলে পুঁজি হারা বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হবে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে অতীতের যে বিশাল দূরত্ব ছিল, তা ইতোমধ্যে দুরীভূত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গর্ভণর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্ভাব্য সবকিছু করবে। তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নও ইতোমধ্যে শুরু করেছেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কস্ট প্রাইসে বিনিয়োগ সীমা গণনার এক যুগের দাবি তিনি এক মাসেই পূরণ করেছেন।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮.০২ পয়েন্ট বা ০.২৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৯.৪৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬.২৪ পয়েন্ট বা ০.৪৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬.১০ পয়েন্ট বা ০.২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৭২.৬৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২২৬.১৫ পয়েন্টে। ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৫৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস হতে ১০০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ১৫৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৬টির বা ৩৫.৭০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ১৪৩টির বা ৩৭.৫৩ শতাংশের এবং ১০২টির বা ২৬.৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ২০.৪৭ পয়েন্ট বা ০.১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৯০.৩৯ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১০১টির, কমেছে ১১১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৫টির দর। আজ সিএসইতে ২৭ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।