শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে জুন ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে ডিভিডেন্ড ঘোষনাকে সামনে রেখে জুন ক্লোজিং কোম্পানির বিভিন্ন খাতের শেয়ারের প্রতি একটু বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে। এছাড়া আর্থিক বছর সম্পন্ন হওয়ায় ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে শেয়ারহোল্ডারা।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দর পতনে একেবারে তলানিতে নেমে এসেছিল জুন ক্লোজিং কোম্পানির বিভিন্ন খাতের শেয়ার। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর অন্তর্নিহিত শক্তি সঞ্চিত হচ্ছিল শেয়ারের। অন্যদিকে সরকার পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা কম দামের শেয়ারে বিনিয়োগ শুরু করছেন। এছাড়া সামনে ডিভিডেন্ড মৌসুম। তাই বিনিয়োগকারীরা ভাল ডিভিডেন্ডের আসায় নতুন করে ঝুঁকছেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে জুন ক্লোজিং কোম্পানি ঘিরে লেনদেনে মগ্ন রয়েছেন তারা। এরই জেরে বাড়ছে এসব কোম্পানির কদর শেয়ার দর।

পুঁজিবাজারে টানা পতনের কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেঁধে দিয়েছে ফ্লোর প্রাইজ। এরপর ঊর্ধ্বমুখী ধারা ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। কিন্তু ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরলেও সুবাতাস দেখা গেছে জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর। অন্যদিকে ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর শেয়ার যেন চলছে অনেকটা ডিমেতালে। গত কয়েকদিনের বাজার বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানা গেছে।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের খাত হলো-ব্যাংক, আর্থিক ও বিমা খাত। সর্বশেষ আজ রোববার (২১ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চিত্রও একই রকম সাক্ষ্য দেয়। শেয়ারদর না বাড়লেও কমতে পারছে না এই তিন খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। কারণ কোম্পানিগুলোর সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইজে অবস্থান করছে।

জানা গেছে, ব্যাংক খাতের ৩৩টি কোম্পানির মধ্যে আজ শেয়ারদর কমতে দেখা গেছে ৭টি বা ২১.২১ শতাংশের। আর শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে ৩টি বা ৯.০৯ শতাংশের। আর শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টি বা ৬৯.৭০ শতাংশের।

ব্যাংক খাতে আজ মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৭০ লাখ টাকার। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ২.১০ শতাংশ। যা ডিএসইর খাত ভিত্তিক লেনদেনে ১৩ তম অস্থান। আজ ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার।

এদিকে, বিমা খাতের ৫৪টি কোম্পানির মধ্যে আজ শেয়ারদর কমতে দেখা গেছে ৩৬টি বা ৬৭ শতাংশের। এতে করে এখাত আবারও বিবর্ণ রূপে ফিরেছে। আর শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে ১০টি বা সাড়ে ১৮ শতাংশের। আর শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টি বা ১৪.৮১ শতাংশের।

আজ বিমা খাতে মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.৬২ শতাংশ। যা ডিএসইর খাত ভিত্তিক লেনদেনে ৭ম অস্থান।

অন্যদিকে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে লেনদেন হওয়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারদর কমতে দেখা গেছে ১০টি বা ৪৫.৪৫ শতাংশের। আর শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে ৭টি বা ৩১.৮২ শতাংশের। আর শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টি বা ২২.৭৩ শতাংশের।  আজ আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩.০৩ শতাংশ। যা ডিএসইর খাত ভিত্তিক লেনদেনে ১০ম অস্থান।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই এই তিন খাতের খারাপ সময় যাচ্ছে। এখাতগুলো ডিসেম্বর ক্লোজিং হওয়ার কারণে এই খাতগুলোর শেয়ারে এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি কিছুটা কম। বর্তমানে শেয়ারবাজারে জুন ক্লোজিং শেয়ারের চাহিদা বেশি। যার কারণে এই ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর শেয়ার ডিমেতালে চলছে। জুন ক্লোজিং শেয়ারের চাহিদা কমতে শুরু করলে হয়তো এখাতগুলোর শেয়ার দরে উত্থান হবে, এমটাই মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।