শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস স্থিতিশীল তহবিলে (ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবণ্টিত লভ্যাংশ পাঠায়নি। এ জন্য কোম্পানিটি পুজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে সময় চেয়েছে। তবে সময় বাড়ানোর জন্য কোম্পানিটি যেসব কারণ উল্লেখ করেছে, তা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

তাই তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলসকে ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর জারি করা নির্দেশনা পরিপালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এ নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হলে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাবধান করেছে বিএসইসি। সম্প্রতি তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে এমন হুশিয়ারির কথা উল্লেখ রয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলে দাবি না করা বা অমীমাংসিত বোনাস শেয়ার স্থানান্তর করার সময় বাড়ানো বিষয়ে গত ২ জানুয়ারী তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলসের একটি চিঠি এসেছে। চিঠিতে দাবি না করা বা অমীমাংসিত বোনাস শেয়ার না প্রদান করার বিষয়ে যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে তা কমিশনের কাছে অগ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

সেই হিসেবে, ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর জারি করা নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হলো। এ নির্দেশনা ব্যর্থতার ফলে কমিশনের আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তথ্য মতে, তারল্য সংকট দূর করতে গত বছর ২০ হাজার কোটি টাকার পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানি ও মিউচুয়্যাল ফান্ডের বিতরণ না করা লভ্যাংশ দিয়ে এ তহবিল গঠন করা হবে বলে জানায় বিএসইসি। গত ২৭ জুন রুলসটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।

সর্বশেষ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে তাদের অবন্টিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলে প্রেরণের নির্দেশ দেয় বিএসইসি। তবে এখনো কিছু কোম্পানি তাদের লভ্যাংশ গঠিত স্থিতিশীল তহবিলে প্রদান করেনি। বিএসইসি ধারণা করেছিল যে, দাবিহীন ও অবণ্টিত অর্থের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকা হতে পরে। তবে এখন পর্যন্ত এ তহবিলে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে বলে জানা গেছে।

পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল গঠনের বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এখন থেকে শেয়ারবাজারের কোনো কোম্পানির কাছে বিনিয়োগকারী বা গ্রাহকের অর্থ তিন বছরের বেশি সময় অদাবিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকলে তা নতুন এ তহবিলে স্থানান্তর করতে হবে। তহবিলে জমাকৃত অর্থ শেয়ারবাজারের উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। তবে কোনো বিনিয়োগকারী কখনো যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে তার লভ্যাংশ দাবি করেন, তাহলে যাচাই-বাছাই শেষে তা তহবিল থেকে নিষ্পত্তি করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের কোম্পানি সচিব বিদ্যুৎ কুমার রায় বলেন, কোম্পানিটির অবন্টিত লভ্যাংশের বিষয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছি। আগামী ৮ এপ্রিল পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। কোনো দাবিদার না থাকলে অবন্টিত লভ্যাংশ স্থিতিশীল তহবিলে প্রদান করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে তাদের অবন্টিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলে প্রেরণের জন্য সর্বশেষ সময় দেয় বিএসইসি। তবে ওই সময়ের মধ্যে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস তাদের অবন্টিত লভ্যাংশ প্রদান করেনি। বরং তারা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আরো সময় চেয়েছে। তাই কমিশিন সার্বিক দিক বিবেচনা করে কোম্পানিটিকে অবন্টিত লভ্যাংশ দ্রুত তহবিলে প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে