শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশে উভয় পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ৫৮টি ব্রোকারেজ হাউজ সরকারি পাওনা বাবদ সিডিবিএলের তিন প্রকার ফি পরিশোধ করছে না। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ক্রমান্বয়ে সিডিবিএল এর ফি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান ক্রমান্বয়ে অর্থ পরিশোধ করলেও দশটি ব্রোকারেজ হাউজের কাছে পাওনা অর্থের পরিমান পাঁচ কোটি টাকার বেশি। ব্রোকারেজ হাউজগুলো অর্থ প্ররিশোধও না করায় প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিপি লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের অর্থ অপরিশোধিত রাখার কারণে ১৩টি ব্রোকারেজ হাউজ ইত্যোমধ্যে স্থগিতাবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও ৫৮টি ব্রোকার হাউজ সরকারি টাকা পরিশোধ করছে না। অথচ ব্রোকারেজ হাউজগুলো বিনিয়োগকারীদের থেকে নিয়মিত অর্থ আদায় করছে। আদায় করার পরেও ব্রোকারেজ হাউজগুলো সরকারি টাকা পরিশোধ না করার কারণে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বিএসইসি।

তবে ৫৮টি ব্রোকারেজ হাউরেজ মধ্যে সরকারি অর্থ সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত রেখেছে ১০টি ব্রোকারেজ হাউজ। এই ১০টি ব্রোকারেজ হাউজকে অর্থ পরিশোধ করার জন্য বার বার বলা হলেও তারা অর্থ পরিশোধ করছে না। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক সিদ্ধান্তের কথাই চিন্তা করতে হচ্ছে বিএসইসি-কে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউজগুলোর শাস্তি হিসেবে ডিপি লাইসেন্স বাতিলসহ কয়েকটি শাস্তির মূখে পড়তে পারে। প্রথম ১০ ব্যর্থ ব্রোকারেজ হাউজের মধ্যে রয়েছে সিনহা সিকিউরিটিজ, এম সিকিউরিটিজ, আইসিবি হেড অফিস, রিলায়েন্স সিকিউরিটিজ কনসাল্টেন্ট, কর্ডিয়াল সিকিউরিটিজ, প্যারম সিকিউরিটিজ, আইসিবি চিটাগাং ব্রাঞ্চ, অ্যালকো সিকিউরিটিজ, হাওলাদার সিকিউরিটিজ এবং এলিগ্যান্ট স্টক অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড। সরকারি অর্থ ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কাছে মোট অপরিশোধিত রয়েছে ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রথম ১০টি ব্রোকারেজ হাউজের কাছে রয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকার বেশি।

এই বিষয়ে সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভ্র কান্তি বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ১০ কোটি টাকার মতো ফি বাকি রয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে তারা এই টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়ে গেছে। কিন্তু আমাদেরকে দিচ্ছে না। ফলে আমরাও সরকারি কোষাগারে টাকা দিতে পরছি না। বিষয়টি আমরা কমিশনকে জানিয়েছি। টাকা না দিলে কমিশনের সাথে আলোচনা করে ডিপি লাইসেন্স বাতিল করা হবে। ডিপি লাইসেন্স বাতিল হলে গ্রাহকরা অনেক ঝামেলায় পড়বেন।

বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, এই জাতীয় একটি অভিযোগ সিডিবিএল কমিশনে জানিয়েছে। আশাকরি সিডিবিএল ও কোম্পানিগুলো মিলে বিষয়টি সমাধান করবে।

সিডিবিএল এর পরিশোধ না করা এই ১০ ব্রোকারেজ হাউজের মধ্যে সিনহা সিকিউরিটিজের কাছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৯ টাকা, এম সিকিউরিটিজের কাছে ৭২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৯৮ টাকা, আইসিবি হেড অফিসের কাছে ৬০ লাখ ৯০ হাজার ৬৮৭ টাকা, রিলায়েন্স সিকিউরিটিজের কাছে ২৫ লাখ ৬২ হাজার ৩৭ টাকা, করডিয়াল সিকিউরিটিজের কাছে ২৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা, প্যারম সিকিউরিটিজের কাছে ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৩৫১ টাকা,

আইসিবি চিটাগং শাখার ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা, এ্যালকো সিকিউরিটিজের কাছে ১৩ লাখ ৪০ হাজার ১৮৩ টাকা, হাওলাদার সিকিউরিটিজের কাছে ১১ লাখ ২৪ হাজার ৭১৭ টাকা এবং এলিগ্যান্ট স্টক এ্যান্ড সিকিউরিটিজের কাছে ১১ লাখ ৪ হাজার ৭৫২ টাকা অপরিশোধিত রয়েছে।