মহামারিকালে রমরমা মুনাফায় স্পিনিং মিলস, রেকর্ড লভ্যাংশের প্রত্যাশা
জয়নাল আবেদিন ও এফ জাহান, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: করোনা মহামারীতে অনেক কারখানা মালিক এত বেশি অর্ডার পেয়েছেন যে বর্তমান সক্ষমতা নিয়ে সময়মতো অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারছেন না। কয়েকটি কোম্পানি ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন কোনো অর্ডার নিতে পারবে না। মুলত আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বাড়ায় রমরমা ব্যবসায় করছে স্পিনিং মিলস গুলো।
এর প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের স্পিনিং মিলসের। তাছাড়া তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের প্রধান কাঁচামাল সুতা। সাম্প্রতিক সময়ে এই সুতার চাহিদা বেড়েছে আশাতীতভাবে। ক্রমাগত ক্রয়াদেশ বাড়ছে স্পিনিং মিলগুলোয়। অনেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত নতুন ক্রয়াদেশ পেয়েছে গত বছরের তুলনায়।
এর প্রভাবে এ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে গত তিন মাস ধরে। করোনাকালীন সময়েও লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় ফিরেছে বস্ত্র খাতের ৯ কোম্পানি। এগুলো হলো- আলহাজ টেক্সটাইল, আনলিমা ইয়ার্ন, জেনারেশন নেক্সট, মালেক স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং, মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং, রহিম টেক্সটাইল, সাফকো স্পিনিং এবং তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ। দেশে করোনা পরিস্থিতির আগে এসব কোম্পানি গত বছর তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান দেখিয়েছিল। তবে হঠাৎ করে ব্যাপক অর্ডার পাওয়ায় কোম্পানিগুলোর মুনাফা বাড়বে বলে ধারনা বিশ্লেষকদের। ফলে কোম্পানিগুলো রমরমা মুনাফা করছে।
এসব ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসছে মূলত চীন, ভারত ও মিয়ানমার থেকে। বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সচল থাকা স্পিনিং খাতের কোম্পানিগুলো। উৎপাদন সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করতে নিচ্ছে নানা কৌশল। তৈরি পোশাক, বস্ত্র, স্পিনিং খাতের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ও আন্তর্জাতিক কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য ঘেঁটে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সূত্রমতে, কভিড মহামারি, শ্রমদর, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মেরুকরণের ফলে অনেক ক্রেতা এখন বাংলাদেশমুখী। যথাসময়ে পণ্য পেতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে সাম্প্রতিক সময়ে ক্রয়াদেশ বাড়িয়েছেন ক্রেতারা। যথাসময়ে পণ্য দিতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানির পরিবর্তে দেশীয় কোম্পানির দিকে বেশি ঝুঁকছেন তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের মালিকরা। এতে স্পিনিং মিলগুলো থেকে উৎপাদিত সুতার চাহিদা বেড়েছে তাদের।
বিটিএমএর তথ্যানুসারে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৪৩৩টিরও বেশি স্পিনিং মিল চালু ছিল। এ কারখানাগুলো বছরে সম্মিলিতভাবে ৩২৭০ টন কেজি তন্তু উৎপাদনে সক্ষম। স্থানীয় উৎপাদকরা নিটওয়্যারের জন্য প্রয়োজনীয় তন্তু ও ফ্যাব্রিকের প্রায় ৮৫-৮৯ শতাংশ সরবরাহ করতে সক্ষম।
বিটিএমএ-র তথ্যানুযায়ী, বোনা কাপড়ের খাতে যে পরিমাণ তন্তুর চাহিদা আছে, স্থানীয় তাঁতিরা তার ৪০ শতাংশের কম সরবরাহ করতে পারে।
এ কারণে কারণে বোনা পোশাক শিল্প বিদেশি ফ্যাব্রিকের ওপর নির্ভরশীল। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক পোশাক নির্মাতাদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ম্যানুফ্যাকচারার ফেডারেশন-এর (আইটিএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত মোট পোশাকের ৭৮ শতাংশই কৃত্রিম তন্তু থেকে তৈরি হয়। বাকি ২২ শতাংশ তৈরি হয় তুলার তন্তু থেকে।
করোনা মহামারির মধ্যেও উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে ও নতুন প্রযুক্তির জন্য পোশাক খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছেন টেক্সটাইল উদ্যোক্তারা। দেশের পোশাক খাতের ক্রমবর্ধমান রপ্তানি চাহিদা মেটাবার জন্যই বাড়ছে বিনিয়োগ।
সূত্র মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এক দশকে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ১৭৬ শতাংশ বেড়ে পেয়ে ৩৪.১৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে ওভেন পোশাকের রপ্তানি ১৯৮ শতাংশ বেড়ে ১৬.৬৩ বিলিয়ন ডলার এবং নিট পোশাকের রপ্তানি ১৬৫ শতাংশ বেড়ে ১৬.৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে দেশ ২৮.৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-র (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, মোট রপ্তানির এই পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১.১ শতাংশ বেশি, কিন্তু ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। পোশাক রপ্তানিকারকরা আশা করছেন, এই অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
পরিসংখ্যান বলছে, তৈরি পোশাক খাত থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে তিন হাজার ১৪৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের পণ্য। পূর্ববর্তী বছর অর্থাৎ ২০১৯-২০-এ যা ছিল দুই হাজার ৭৯৪ কোটি ৯১ লাখ ডলার। করোনা-পূর্ববর্তী সময় অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৪১৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাত থেকে রপ্তানি কমেছিল ৬১৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
স্থানীয় মুদ্রায় পাঁচ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। পরের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২০-২১-এ কিছুটা বাড়লেও ২০১৮-১৯-এর তুলনায় ঘাটতি রয়েছে ২৬৭ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই অর্থবছরের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারে রপ্তানি বাজার।
এর সঙ্গে বাড়তি প্রবৃদ্ধি যোগ করলে রপ্তানি সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এতে গত দুই বছরের ঘাটতি পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এসব মিলিয়ে এবার মোট রপ্তানি বাজারের লক্ষ্যমাত্রা আশা করা হচ্ছে, চার হাজার ছাড়িয়ে চার হাজার ২০০ কোটি ডলারে যাবে। এখন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের দায়িত্বই হচ্ছে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনা। সবাইকে কাজে ফেরানো। নীতি সহায়তা ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে এটি সম্ভাবনা হয়ে দেখা দিতে পারে।
এ বিষয়ে একাধিক স্পিনিং মিল মালিক ও প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এ প্রতিবেদক। এর মধ্যে কয়েকটি রয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, হঠাৎ গত কয়েক মাসে ক্রয়াদেশ বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি ফ্যাক্টর কাজ করেছে। যেগুলো বাস্তবতা পরিস্থিতিতে তৈরি হয়েছে।
আমাদের তৈরি ফিনিশড বা ব্যবহার উপযোগী পণ্যের প্রধান রপ্তানি বাজার ইউরোপ। এখন সেখানকার করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। মানুষজন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছেন। কভিডকালে বাসায় থাকায় হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য বিশেষ করে বিছানার চাদর থেকে শুরু করে তোয়ালে, ম্যাট্রেস, আরামদায়ক গৃহ থাকাকালীন পোশাকের ব্যবহার বেশি হয়েছে। আবার তৈরি পোশাকগুলো পুরোনো হয়েছে। এখন সেসবের চাহিদা বেড়েছে।
স্বাভাবিক সময়ের হিসেবে এ মৌসুম হচ্ছে আমাদের অর্ডার নেয়ার সময়। কিন্তু পার্শবর্তী দেশগুলো কেউ করোনা, আবার কেউবা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যায় পড়ে গেছে। ভারতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় মিল-কারখানা সচল রাখতে পারছে না। কবে নাগাদ পরিস্থিতি উন্নতি হবে তাও বলা যাচ্ছে না। মিয়ানমারে সরকার ও রাজনৈতিক সমস্যা চলছে। এসব বিবেচনায় বাংলাদেশ অনেকটাই মুক্ত। এজন্য বড় ক্রেতারা বাংলাদেশের দিকেই ঝুঁকছেন।
ক্রেতারা মনে করছেন, বাংলাদেশ থেকে যথাসময়ে পণ্য পাওয়া যাবে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। সব দেশে শিপ চলাচল করছে না। বাংলাদেশে এখন কারখানাগুলো সচল রাখা যাচ্ছে। আবার বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যথাসময়ে পণ্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরেছেন। সব মিলিয়ে ক্রেতারা আমাদের বেছে নিচ্ছেন। তাই ক্রয়াদেশ বেড়েছে।
এ বিষয়ে বিকেএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট-২ ও মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডায়িং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমল পোদ্দার বলেন, ‘নতুন ক্রয়াদেশ আসছে। আমাদের নিটিং খাতের বড় রপ্তানি বাজার হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো। বায়াররাও ইউরোপকেন্দ্রিক। কিন্তু সেই বায়াররা এখন বাংলাদেশে ক্রয়াদেশ বাড়িয়েছে। এমনকি চীন থেকেও নতুন চাহিদা আসছে। পাশাপাশি মিয়ানমার ও ভারত থেকেও চাহিদা আসছে। ভালো সক্ষমতার কিছু মিল আগামী ছয় মাসে নতুন কোনো অর্ডার নিতে পারবে না।’
শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ খাতে ৪২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বিনিয়োগের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাবার জন্য উৎপাদন মান বাড়ানো ও উৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা। আন্তর্জাতিক বাজারে কৃত্রিম তন্তুর চাহিদা বেশি বলেই জানিয়েছেন তারা। ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচির কারণে বাংলাদেশের পোশাকের সবচেয়ে বড় দুই বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি প্রকোপ কমে গেছে।
ফলে এই বাজারগুলোতে তৈরি পোশাকের চাহিদা এখন আবার প্রায় কোভিডপূর্ব সময়ের সমান বলে জানিয়েছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। অনেক কারখানা মালিক এত বেশি অর্ডার পেয়েছেন যে বর্তমান সক্ষমতা নিয়ে সময়মতো অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারবেন না। এছাড়া চীন-আমেরিকার বাণিজ্যযুদ্ধও দেশের উদ্যোক্তাদের তন্তু এবং ফ্যাব্রিকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করেছে।
শিল্প সংশ্লিষ্টদের বরাতে আরও জানা যায়, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ হিসেবে দেশের পোশাক খাত পলিয়েস্টার, সিন্থেটিক, ভিসকোস লিক্রা-র (কৃত্রিম তন্তু হিসেবে পরিচিত) মতো মিশ্র তন্তু ও ফ্যাব্রিক উৎপাদনে পিছিয়ে আছে। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাবার জন্য দেশের উদ্যোক্তাদের এখনও এ জাতীয় তন্তু ও ফ্যাব্রিক আমদানি করে আনতে হয়। বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো ইতোমধ্যে এসব পণ্য উৎপাদনের জন্য তাদের প্রযুক্তির উন্নতি ঘটিয়েছে। এ কারণেও দেশের উদ্যোক্তারা কারখানার আধুনিকীকরণ ও উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছেন। স্টেকহোল্ডারদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, নতুন বিনিয়োগের ফলে প্রায় ৬,০০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিটি কারখানা এখন বিএমআরই (ব্যালেন্সিং, মডার্নাইজেশন, রিহ্যাবিলিটেশন, এক্সপেনশন) অর্থাৎ ভারসাম্যকরণ, আধুনিকায়ন, পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণে বিনিয়োগ করছে। তিনি আরও জানান, গত দশ বছরে যেসব কারখানা এসব খাতে বিনিয়োগ করেনি, তারা এখন ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়েছে।
সুতি ও কৃত্রিম ফ্যব্রিকসহ টেক্সটাইল পণ্যের চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘বর্তমানে আমার কারখানায় প্রতিদিন ১০০ টন কাপড়ের রপ্তানি অর্ডার রয়েছে। কিন্তু আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র ৬০ টন। স্থানীয় উদ্যোক্তা ছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও কৃত্রিম ফ্যাব্রিক উৎপাদনের জন্য দেশে কারখানা স্থাপনের জন্য এগিয়ে আসছেন।
কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের মালিক, বিখ্যাত কোরিয়ান শিল্প গ্রুপ ইয়ংগোন কোরিয়ান এ বছরের প্রথম দিকে ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা কৃত্রিম ফ্যাব্রিক উৎপাদনে ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। কিন্তু কৃত্রিম তন্তু তৈরি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে।
এনভয় টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমে বলেন, মিশ্র তন্তু উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তাদের প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে। তারা আশা করছেন, এর ফলে ওভার-রেট খরচ কমে আসবে। পুরনো কারখানা হিসেবে আমাদেরকে নতুনদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম বিনিয়োগ করতে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় কাপড়ের চাহিদা শিগগিরই মহামারিপূর্ব সময়ের চেয়েও বেড়ে যেতে পারে ধারণা করে তাদের কোম্পানির সক্ষমতা অগ্রাধিকার ঠিক করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি কুতুবউদ্দীন আহমদ আরও বলেন, বিক্রির জন্য যাতে কোনো মার্কেটিং করতে না হয়, সেজন্য তার প্রতিষ্ঠান উন্নতমানের ফ্যাব্রিক তৈরি করে। চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণেও আমাদের মিশ্র তন্তু উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। আগে এ তন্তু চীন থেকে আমদানি করা হতো। পোশাক খাতের আরেক বড় রপ্তানিকারক ডিবিএল গ্রুপ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৫৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
টেকসই পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে শাশা ডেনিম জমি কেনার জন্য ইতোমধ্যে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ জানিয়েছেন, তারা বিদ্যমান সক্ষমতা ব্যবহার করে আরও বেশি উচ্চমান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা করছেন। এছাড়াও সুতা কাটা রিসাইকেলিংয়ের জন্য একটি নতুন প্ল্যান্ট ও পরিবেশবান্ধব ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজও চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি।
নতুন প্রকল্পটিতে প্রায় ৫ কোটি মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে বলে জানান শামস মাহমুদ। গত বছর ডেনিম মিলটি ইতালিয়ান টেক্সটাইল মিল ইওএস টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের একটি অংশও কিনে নেয়। সূত্র: দেশ প্রতিক্ষণ