অর্থমন্ত্রী তার জীবন বাজি রেখে শেয়ারবাজারকে ওঠাবেন
আতিউর ভূত পিছু ছাড়ছেনা শেয়ারবাজারের। ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই ভূত বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকায় একদিনের জন্য মাথা উঠিয়ে দাড়াতে পারেনি শেয়ারবাজারের সূচক। তাই আমার মত বিনিয়োগকারীসহ পুঁজিবাজারের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী কায়মনোবাক্যে বিধাতার কাছে এই ব্যক্তিটির অপসারণ কিংবা পদচ্যুতায়ন প্রার্থনা করতেন। অবশেষে চুরির দায় নিয়ে তিনি গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিদায় হয়েছেন।
এতে যথারিতি আমাদের সহকর্মীরা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর ব্যানারে আনন্দউল্লাসও করেছেন। কিন্তু আমরা জানিনা কোথা থেকে সেই আতিউরের নামে এক উড়ো খবর (যার পুরোটাই গুজব) মৃত বাজারটিকে আবার বিধ্ধস্ত করে ফেলছে।
যেখানে তিনি সরে যাওয়ার পরদিন থেকেই বাজার ভালো হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেখানে ফল হয়েছে উল্টো। গুজব রটেছে তিনিই নাকি হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। আর এবার অর্থমন্ত্রী হলে তিনি আরো প্রবল বেগে প্রতিশোধ নেবেন শেয়ারবাজারের ওপর।
গুজবের ডালপালা মহীরুহু আকার ধারন করে এমন কথাও ছড়াচ্ছে যে , সাবেক এই গভর্নর নাকি বলেছেন, বিনিয়োগকারীদের বদদোয়ায়ই নাকি তার কপাল পুড়েছে তাই আবার ক্ষমতা পেলে তিনি তাদের দেখে নেবেন। অথচ এর টোটালটাই ভোগাস রাবিশ এবং বানোয়াট।
গভর্নরের নামে এমনটি যারা বলছে তারা শতভাগ মিথ্যা বলছে। ঠিক তেমনি শতভাগ মিথ্যা রটেছে যে তিনিই নাকি এই দেশের পরবর্তী অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন। যারা একেবারেই যুক্তিহীন কিংবা বিকৃত মস্তৃস্কের অধিকারী তারাই শুধুমুত্র এমনটি বিশ্বাস করবে।
কারণ, কোনো দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ চুরির ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয় সারা বিশ্বকেই অবাক করেছে। এই বিষয়ের সাথে যারাই জড়িত থাকুকনা কেনো ঘটনাস্থলের শীর্ষব্যাক্তি হিসাবে কিছুতেই দায় এড়াতে পারবেননা গভর্নর। আর এই দায়ের বোঝা মাথায় নিয়েই তিনি পদত্যাগ করেছেন।
ফলে তিনি যত অভিজ্ঞ কিংবা সৎ ব্যক্তিই হোননা কেনো তাকে এই ঘটনার পর তার চেয়েও বড় কোনো পদে বসালে গোটা পৃথিবীর মানুষ বাংলাদেশকে ছিছি দেবে। তাছাড়া দেশে কি অর্থনীতিবিদের এতই অভাব পড়েছে যে একজন দাগী ব্যাক্তিকে আবার ডেকে এনে শেয়ারবাজারের পর দেশের অর্থনীতিকে ধংসের সুযোগ দেয়া হবে?
আমি ব্যাক্তিগতভাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে যতখানি চিনেছি তাতে নিশ্চিত করে বলতে পারি তিনি কারো সাথে এমন কোনো দায়ে পড়েননি যে পদস্থলিত একজন ব্যাক্তিকে রাষ্ট্রের মন্ত্রী বানাবেন। বরং যদি বর্তমান অর্থমন্ত্রী চলেই যান সেক্ষেত্রে তিনি দেশবাসীকে এমন চমক দিবেন যাতে শেয়ার বাজারের লাখ লাখ বিনিয়োগকারীসহ ব্যবসায়ী মহলও খুশি হয়। তবে শেষ কথা হচ্ছে এমনটি হওয়ার এখনই কোনো সম্ভবনা নেই। কারন আবুল মাল আব্দুল মুহিত সবার শ্রদ্ধাভাজন,যোগ্য, সৎ এবং অভিজ্ঞ।
তার কাছ থেকে যারা স্বার্থ আদায় করতে পারেনি শুধুমাত্র তারাই অর্তমন্ত্রী থাকছেননা কিংবা থাকবেননা বলে গুজব ছড়াচ্ছে। আর পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর হলো এই অর্থমন্ত্রীই এখন ধীরে সুস্থে শেয়ার বাজারকে একটি সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জীবন বাজী রেখে কাজ করবেন। কেনো করবেন তা অবশ্যই জ্ঞানী ব্যক্তিদের বলে দিতে হবেনা।
অর্নব সেন, ঢাকা