বাংলাদেশে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে আগামী ৯ মার্চ, বুধবার। ঢাকার স্থানীয় সময় বুধবার ভোর ৬টা ১২ মিনিটে সূর্যোদয়ের পর থেকেই সূর্যগ্রহণ শুরু হবে। এর সর্বোচ্চ পর্যায় থাকবে ৬টা ৩৮মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে এবং সমাপ্ত হবে ৭টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ডে।

বাংলাদেশ ছাড়াও আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে চীন, জাপান, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশ, হাওয়াই, আলাস্কা থেকে। আর ইন্দোশিয়ার কিছু দ্বীপ থেকে ওইদিন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। বাংলাদেশ থেকে পরবর্তী আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর। ২১১৪ সালের ৩ জুনের আগে বাংলাদেশ থেকে কোনো পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দৃশ্যমান হবে না।

সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে ঘুরছে, একইসঙ্গে চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। সূর্য ও পৃথিবীকে নিয়ে একটি তল কল্পনা করলে চাঁদ সাধারণত সেই তলে পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে না। কিন্তু কোনো কোনো সময়ে (অমাবস্যার সময়) পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চাঁদ সেই তলে একই সরল রেখায় চলে আসে।

সূর্য চাঁদের আড়ালে চলে যায় এবং চাঁদের সংকীর্ণ ছায়া তখন পৃথিবীর বুকে ভ্রমণ করে। সেই ছায়া যেসব জায়গার ওপর দিয়ে যায় সেখান থেকে মনে হয় সূর্য ধীরে ধীরে ঢেকে যাচ্ছে। ছায়ার কেন্দ্রে যেসব অঞ্চল পড়বে সেখান থেকে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। আর কেন্দ্রের বাইরে দেখা যাবে আংশিক সূর্যগ্রহণ।

অনুসন্ধিৎসু চক্রের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি মো. শাহজাহান মৃধা জানান, সূর্যগ্রহণ খালি চোখে দেখা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এক্সরে ফিল্ম, নেগেটিভ, ভিডিও ও অডিও ক্যাসেটের ফিতা, সানগ্লাস, ঘোলা বা রঙিন কাচে এসব ক্ষতিকর অতিবেগুনি ও অবলোহিত রশ্মি আটকায় না। তাই কোনক্রমেই এগুলো দিয়ে সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা যাবে না।

চক্রের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগ আরো জানিয়েছে, ১৩ ও ১৪ গ্রেডের ওয়েল্ডিং গ্লাস আ আর্ক গ্লাস দিয়ে নিরাপদে সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা যায়। ১১ গ্রেডের ওয়েল্ডিং গ্লাস দিয়েও গ্রহণ দেখা যাবে, তবে সেক্ষেত্রে দুটি গ্লাস একত্রে জোড়া দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। তবে কোনো ফিল্টার দিয়েই একনাগাড়ে বেশিক্ষণ তাকানো যাবে না। সোলার ফিল্টার ছাড়াও পিনহোল ক্যামেরা দিয়ে কোনো পর্দার ওপর সূর্যের প্রতিবিম্ব ফেলে গ্রহণ দেখা যেতে পারে।

সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণের জন্য বিজ্ঞান সংগঠন অনুসন্ধিৎসু চক্র নানা প্রস্তুতি নিয়েছে। এ পর্যবেক্ষণে আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ থাকছে সব ব্যবস্থা। রাজধানীর গ্রিন মডেল টাউনে সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ ক্যাম্পটি অনুষ্ঠিত হবে। মেঘমুক্ত আকাশ থাকা সাপেক্ষে ক্যাম্প শুরু হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিট থেকে। গ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ ক্যাম্প সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এই ক্যাম্প থেকে ছবি ও বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এই জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যাম্পে ৮ ইঞ্চি স্মিড ক্যাসিগ্রেইন টেলিস্কোপ থাকবে। ঢাকার বাইরে অনুসন্ধিৎসু চক্রের উদ্যোগে সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে।

পঞ্চগড়ে অনুসন্ধিৎসু চক্রের বোদা শাখার আয়োজনে বোদা পল্লী বিদ্যুৎ সংলগ্ন মাঠ, রাজশাহীতে অনুসন্ধিৎসু চক্রের রাজশাহী শাখা ও অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অব রুয়েট যৌথভাবে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে, ঝিনাইদহে অনুসন্ধিৎসু চক্রের ঝিনাইদহ শাখার উদ্যোগে বীরেশ্রষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়াম, বরিশালে অনুসন্ধিৎসু চক্রের বরিশাল শাখার আয়োজনে বরিশাল সদরের মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমি এই দুটি স্থানে ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে। সূর্যগ্রহণ ক্যাম্পে যোগদান ও পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যে কেউ অনুসন্ধিৎসু চক্রের কেন্দ্রীয় দপ্তর ৪৮/১, দক্ষিণ মুগদাপাড়া, ঢাকা-১২১৪ এই ঠিকানায় যোগযোগ করতে পারেন।

ফোন:৭২৭৫৮৮৫, ০১৮১৯৯২৬১৬০ 

ইমেইল : achokro@gmail.com, www.achokro.org

ফেসবুকে : www.facebook.com/Anushandhitshuchokro