পুঁজিবাজারে যে কারণে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস, নভেম্বর মাসে লেনদেন বাড়ার পূর্বাভাস!
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। ফলে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সূচকের বড় উত্থান হলেও ডিএসইতে গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। তবে লেনদেন খরা দেখা দিলেও বাজারটিতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে।
ফলে বড় পতনের পর পুঁজিবাজারে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। এছাড়া ৩১ কার্যদিবসে ডিএসই ৫৮৭ পয়েন্ট সূচকের দরপতন হয়েছে। ফলে বড় কারেকশনের পর পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ায়। যার ফলে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে লভ্যাংশ মৌসুমে শেয়ারে ভর করে পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস দিচ্ছে। আশা করা যায় নতুন মাসের শুরুতে ঘুরে দাঁড়াবো পুঁজিবাজার।
বিশেষ করে হঠাৎ সূচকের এই উত্থানকে ‘লভ্যাংশ মৌসুমে বাজারের প্রত্যাশিত প্রত্যাবর্তন’ হিসেবে দেখছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কারণ টানা দরপতনে অধিকাংশ শেয়ারের দাম তলানিতে চলে এসেছে। গত ৩১ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৮৭ পয়েন্ট দরপতন হয়েছে। এর ফলে অধিকাংশ শেয়ারের দাম ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ দরপতন হয়েছে। ফলে হঠাৎ সূচকের এই উত্থান ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
তেমনি আগামী দিনগুলোতে বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে বলে তারা মনে করেন। তেমনি পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা আনতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) কে ১ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়টি বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তারা।
পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান বলেন, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা মানুষের মনে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও রাজনৈতিক অনৈক্যে মানুষের মনে নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে।
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিও কমে এসেছে। সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তার প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়ছে। এ ছাড়া অতীতের নানা অনিয়ম তদন্ত ও একের পর এক শাস্তির বিধানে বড় বিনিয়োগকারীরা নিস্কিয় হয়ে গেছেন। দীর্ঘ মেয়াদে এসব পদক্ষেপের সুফল হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু স্বল্প মেয়াদে যে প্রভাব পড়ছে, সেটি কাটিয়ে ওঠা এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মনে করেন।
জানা গেছে, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচক বাড়লেও কমেছে টাকার পরিমানে লেনদেন। তবে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১১১ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮১ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৮ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩০০ টির, দর কমেছে ৫৩ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৫ টির। ডিএসইতে ৩৯৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৪২ কোটি ৪০ লাখ টাকার ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২৮২ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১১ টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির মধ্যে ৮৩ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৯৪ টির এবং ৩৪ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

