শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জীবন বীমা কোম্পানি সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স হাজার হাজার গ্রাহকের বীমা দাবির অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তার পরিবার। তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের কাছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিবার তাদের দেড় কোটিরও বেশি উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন। আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সময়ে জাহিদ মালেক কোম্পানিটির চেয়ারম্যান থাকলেও মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর শুধু উদ্যোক্তা হিসেবেই রয়েছেন তিনি। বর্তমানে সানলাইফের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন জাহিদ মালেকের বোন রুবিনা হামিদ।

পরিচালক হিসেবে রয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রী শাবানা মালেক, ছেলে রাহাত মালেক ও বোন রুবিনা হামিদের স্বামী কাজী আখতার হামিদ। রুবিনা হামিদের আগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক কোম্পানির চেয়ারম্যান ছিলেন। গত ২৯ অক্টোবর পরিচালকরা কোম্পানিটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে কোম্পানির উদোক্তা-পরিচালকদের কাছে ১ কোটি ৫৪ লাখ বা মোট শেয়ারের ৪৩ শতাংশ রয়েছে।

ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যর্থতার কারণে কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হয়ে পড়ে। কোম্পানিটি যা আয় করে তারচেয়ে বেশি ব্যয় দেখাচ্ছে। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি ১৯০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে, যার পুরোটাই গ্রাহকদের জমাকৃত অর্থ। এ ছাড়া আইন লঙ্ঘন করে তহবিল বিনিয়োগের অভিযোগও রয়েছে।

আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, বীমা দাবি পরিশোধ করতে না পারায় বর্তমানে ৬ হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থায়। বীমাগ্রহীতাদের স্বার্থ সংরক্ষণে বাধ্য হয়ে কোম্পানিটিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় আইডিআরএ। তবে এতেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

গত ১০ বছরের মধ্যে পাঁচ বছরই এর শেয়ার হোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ছিল ২০১৪ সালে, মাত্র ৬ শতাংশ। আজ সোমবার ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার ৫২ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। ২০১২ সালে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সেই সময় কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ছিলেন জাহিদ মালেক। পরে তিনি মন্ত্রী হলে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।