শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:  চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ডাক দিচ্ছে এবং আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) আবুধাবির এমিরেটস প্যালেস হোটেলে ‘ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব: নেটওয়ার্কিং ডিনার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শিল্প বিপ্লব মিস করেছি। কারণ আমরা তখন স্বাধীন ছিলাম না। কিন্তু এখন আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অর্জন করব ইনশাআল্লাহ। সেভাবেই আমরা নিজেদের প্রস্তুত করছি।

ওয়ালটনের প্রসঙ্গ টেনে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ওয়ালটন বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ইলেকট্রনিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিলিয়ন ডলারের টার্নওভার রয়েছে। দাম ও গুণগতমানের কারণে ওয়ালটনের উৎপাদিত পণ্য এখন বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। স্যামসাং বাংলাদেশে আছে। তারা বাংলাদেশে টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল, ওয়াশিং মেশিন, এয়ার কন্ডিশনসহ সবকিছুই তৈরি করছে। আর্সেলিক ও এলজি এখানে আগে থেকেই আছে। কিন্তু তারা পুরোদমে উৎপাদনে নেই। আশা খুব শিগগিরই তারা পূর্ণাঙ্গভাবে উৎপাদন শুরু করবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ইলেকট্রনিক্স ছাড়াও মোটর শিল্পেও বাংলাদেশ এগোচ্ছে। আমাদের প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে মিতসুবিশি মোটরসের চুক্তি রয়েছে। তারা বাংলাদেশে পাজেরো জিপ অ্যাসেম্বল করছে। বাংলাদেশে মিতসুবিশি গাড়ি তৈরি করছে। আর বাংলাদেশে প্রোটন সাগা গাড়ি তৈরি করছে পিএইচপি গ্রুপ। এছাড়া হুন্দাই বাংলাদেশে এ বছর থেকে তাদের গাড়ি তৈরি করবে। তাই আমরাও এখন অটোমোবাইল শিল্পের সঙ্গে আছি।

প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে বিএসইসি ‘ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব: নেটওয়ার্কিং ডিনার’ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে। আর এ অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক জায়ান্ট ওয়ালটন।

এদিকে, এ অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী এবং স্টেক হোল্ডাররা অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে আগত অতিথিরা বিভিন্ন সেক্টর নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।

সেখানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতি, শেয়ারবাজার ও সার্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি এবং এফডিআই’র বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া, দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হবে।

বিশেষ করে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কীভাবে শেয়ার বাজারে সরাসরি বিনিয়োগ করবেন তার কৌশল ও সার্বিক নিরাপত্তার বিষয় তুলে ধরা হয়। এর আগে, বুধবার (৯ মার্চ) দুবাই ফেস্টিভ্যাল সিটিতে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিট) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল কালাম আব্দুল মোমেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজার) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুনসহ সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন।