শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: দেশের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন ও ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপনায় নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়াও তিনি সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে রেখেছেন কৃতিত্বের ছাপ।

পাশাপাশি পুঁজিবাজারের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে দেখিয়েছে একের পর এক চমক। ফলে সব শ্রেনীর বিনিয়োগকারীদের মাঝে দ্রুত আস্থা ফিরে আসে। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের যাদুকর বলছেন বিনিয়োগকারী সহ বাজার সংশ্লিষ্টরা।

অধ্যাপক শিবলী গত বছরের ১৭ মে বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তার কমিশনের একের পর এক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহনের ফলে বাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থার সঙ্কট কাটছে। ফলে সব শ্রেনীর বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছে। যার প্রতিফলন দেখা যায় উভয় পুঁজিবাজারের বিভিন্ন সূচকের চিত্রে।

করোনাকালের মন্দা অর্থনীতির বিপরীতে পুঁজিবাজারের চলমান চাঙ্গা অবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক নয়। এই বাজার দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এখন খুবই আকর্ষনীয়। পুঁজিবাজারের ভবিষ্যতও উজ্জল। একাত্তর টিভির সাথে বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন খোদ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াৎ উল ইসলাম।

বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াৎ উল ইসলাম বলেছেন, পুঁজিবাজার নিয়ে ভয়ের কোন কারন নেই। বাজার তার নিজ শক্তিতে বড় হচ্ছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে এখনও কোন ঝুঁকি নেই। ঝুঁকি নজরে আসলে তার কমিশন সবাইকে সর্তক করবেন বলে জানান। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী সহায়তায় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তিনি জানান।

বিএসইসিতে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াৎ উল ইসলামের নেতৃত্বের পনেরো মাসে ২২ আগস্ট পর্যন্ত ডিসএইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। করোনাকালে দেশের অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচকই যখন নেতিবাচক তখন শেয়ারসূচকের এমন উত্থানে প্রশ্ন আছে অনেকের। তাদের মতে, এটি অর্থনীতির গতির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। তবে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার দাবি, এই উর্দ্ধগতির যৌক্তিকতা আছে। পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের ধারা নিয়েও সন্তুষ্ট তিনি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, পুঁজিবাজার এখন বর্তমান এবং ভবিষ্যত বিনিয়োগের জন্য নির্ভরযোগ্য ক্ষেত্র। শিগগিরই কিছু ভালো আইপিও আসার কথাও আগাম জানালেন তিনি।

এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসই ও সিএসইর সূচক সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে রেকর্ড গড়েছে। ডিএসই’র ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ডিএসইএক্স সূচক ৬ হাজার ৮৬২.৪১ পয়েন্ট ছুঁয়েছে। একইভাবে ডিএস-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকও সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে। পাশাপাশি সিএসই’র সিএএসপিআই সূচক ২০ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করে রেকর্ড গড়েছে। আর প্রধান সূচক সিএসইএক্সও নতুন রেকর্ড গড়েছে।

এদিন উভয় শেয়ারবাজারে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। তবে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। সোমবার ডিএসইর প্রধান ডিএসইএক্স সূচক ২০.১৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ৮৬২.৪১ পয়েন্টে, যা ডিএসইর ইতিহাসে সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান। এর আগের দিন রোববার ২২ আগস্ট ডিএসইএক্স সূচকটি ৬ হাজার ৮৪১.২৩ পয়েন্টে পৌঁছে নতুন রেকর্ড গড়েছিল।

এদিন একইভাবে ডিএসই-৩০ সূচক ৮.০৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ৪৫৯.৯৪পয়েন্টে, যা ডিএসইর ইতিহাসে সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান। একইভাবে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭.৬০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪৮৭.৩২ পয়েন্টে, এটিও ডিএসইর ইতিহাসে সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান। দিন শেষে ডিএসইতে ৩৭৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৬টির, কমেছে ১৮৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। ডিএসইতে এদিন ২ হাজার ৭৭৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৮ কোটি টাকা বেশি। সোমবার অপর শেয়ারবাজার সিএসইর প্রধান সিএসইএক্স সূচক ৪৯.৭১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১ হাজার ৯৯২.০২ পয়েন্টে, যা সিএসই ইতিহাসে সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান। আর সার্বিক সিএএসপিআই সূচক ৭৯.৮৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২০ হাজার ১.৩১ পয়েন্টে, যা সিএসইর ইতিহাসে সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান।