forgain-investশেয়ারবার্তা২৪ ডটকম, ঢাকা: ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে সক্রিয় ছিল বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে আলোচিত বছরে  নিট  বিদেশি বিনিয়োগ ৬ গুণ বেড়ে ৭ গুণে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে পোর্টফোলিও বিনিয়োগ এর এই তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, দেশের শেয়ারবাজারে গত ডিসেম্বরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিট পোর্টফোলিও বিনিয়োগ ছিল ২৮৫ কোটি টাকা।

সদ্যসমাপ্ত ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রায় ৬৮১ কোটি টাকার  শেয়ার কেনেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এর বিপরীতে বিক্রি করেন ৩৮৫ কোটি টাকার শেয়ার। এর মাধ্যমে গত বছর বিদেশিদের নিট শেয়ার কেনার পরিমাণ ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

২০১৬ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৫ হাজার ৫৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন। এর বিপরীতে বিক্রি করেছেন ৩ হাজার ৭১৬ কোটি টাকার শেয়ার। ফলে নিট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ১ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে তাদের নিট বিনিয়োগ ছিল মাত্র ১৮৫ কোটি টাকা।

২০১৬ সালে শেয়ার কেনা-বেচা মিলিয়ে বিদেশিদের মোট লেনদেন হয়েছে ৮ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকার। আগের বছর লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেন ৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে বিদেশিদের নিট শেয়ার কেনার পরিমাণ ছিল মাত্র ১৮৫ কোটি টাকা, এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সাড়ে ছয় গুণেরও বেশি বেড়েছে।

অবশ্য ২০১৪ সালে বিদেশিদের নিট বিনিয়োগ ছিল দুই হাজার ৬২০ কোটি টাকা। ওই বছর ছয় হাজার ৬০১ কোটি টাকা লেনদেনের মধ্যে বিদেশিরা শেয়ার কিনেছিলেন চার হাজার ৬১০ কোটি টাকার এবং বিক্রি করেছিলেন এক হাজার ৯৯১ কোটি টাকার।

তবে ২০১৪ সালের তুলনায় গত বছর বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগ সোয়া দুই হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত বছর বিদেশিরা পাঁচ হাজার ৫৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনেন। বিপরীতে বিক্রি করেন তিন হাজার ৮১৭ কোটি টাকার শেয়ার। অর্থাৎ গত এক বছরে বিদেশিরা মোট আট হাজার ৮৭৪ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন।

ডিএসই ও সিএসইতে গত বছর এক লাখ ২৬ হাজার ৮৯২ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। শেয়ার কেনা ও বেচার হিসাবে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশিদের লেনদেনের অংশ ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে এ হার ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৫৭ এবং ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

বিদেশিদের পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা করেন এমন একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি বছর বিদেশিদের বিনিয়োগ আরও কিছুটা বাড়বে। তারা আরও জানান, বিদেশিরা আগে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও এখন দেশীয় কিছু শেয়ারে বেশি বিনিয়োগ করছেন।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, টানা দর পতনের মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালে দেশের পুঁজিবাজারে মূল্যস্তর অত্যন্ত বিনিয়োগ অনুকূল অবস্থানে নেমে এসেছিল। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এই অবস্থাকে কাজে লাগিয়েছেন। তারা তুলনামূলক শস্তায় বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন।

মূল্যস্তরের পাশাপাশি দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ক্রমহ্রাসমান ব্যাংক সুদ হার, আবাসন খাতসহ বিকল্প খাতে বিনিয়োগের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসা ইত্যাদি বিষয়ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরকে বাড়তি বিনিয়োগে উৎসাহী করেছে।

তাদের মতে, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে রক্ষণশীলতা থেকে বের হয়ে আসা। দু’বছর আগেও বিদেশির্ াবহুজাতিক কোম্পানির বাইরে অন্য কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চাইতেন না। করলেও সে ধরনের কোম্পানির সংখ্যা ৭/৮টির বেশী নয়। কিন্তু বর্তমানে তারা স্থানীয় অনেক কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছেন। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ