Gulshionশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ও খুবই নম্র-ভদ্র, চুপচাপ ছিল। বাড়ির বাইরেও যেত না স্কুল-কোচিং ছাড়া। এমনকি কোনো পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলেও আমাদের সঙ্গে সঙ্গেই থাকত। এই ছেলে কী করে নিখোঁজ হলো, কী করে জঙ্গিদের সঙ্গে মিশল, কোনোভাবেই আমাদের মাথায় ঢুকছে না।’- বলছিলেন রোহান ইবনে ইমতিয়াজের ফুপু।

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী যে পাঁচজনের ছবি সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপ আইএসের বরাতে প্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে রোহান অন্যতম। তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্যবিলুপ্ত কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ইমতিয়াজ খান বাবুলের একমাত্র ছেলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোহানের এক চাচা গতকাল এক পত্রিকাকে বলেন, আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। কী একটা বিষয়! কাউকে বলতেও পারছি না, সইতেও পারছি না। যে ছেলেকে গত জানুয়ারি থেকে পাগলের মতো খুঁজেছি আমরা, সেই ছেলেকে এভাবে পাব কল্পনায়ও ভাবিনি।

তিনি বলেন, আমরা ওর লাশ নিতে যাব না। ওর লাশ শেয়াল-কুকুরে খাবে, তবু আমরা ছোঁব না। কারণ সারাজীবন যে জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে এসেছি, সেই জঙ্গিদের দলে আমাদের ছেলে, এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টেুরেন্টে হামলার পর যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহত জঙ্গি রোহান ও মোবাশ্বিরের বাবা তাদের ছেলের কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমতিয়াজ খান বাবুল বলেন, ‘আমি একজন ব্যর্থ বাবা। আমার ছেলের কর্মকাণ্ডের জন্য আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি তার লাশ আনতেও যাইনি।’

নিহত আরেক জঙ্গি মোবাশ্বিরের বাবা মীর হায়াত কবীর একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, ‘ও আমার ছেলে হতে পারে না। আমি যদি জানতাম, ও সেখানে যাচ্ছে, তাহলে জীবন দিয়ে হলেও তাকে থামাতাম। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করা ছেলে যেন ইসলামের ব্যাপারে বিকৃত ধারণা না পায়, সে ব্যাপারে তাকে সচেতন করতে পবিত্র কোরআনের ইংরেজি সংস্করণও দিয়েছিলাম।’

মীর হায়াত কবীর জানান, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মোবাশ্বির নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি গুলশান থানায় জিডি করেছিলেন। শুক্রবার রাতে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্টুরেন্টে হামলা চালায় একদল জঙ্গি। সেখানে তারা দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে।

১৭ বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে হত্যা করে তারা। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযানে জিম্মিদের ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। অভিযানে ছয় হামলাকারীও নিহত হয়।