ipoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) কোটা সুবিধা ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এরপর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা আইপিওতে কোটা সুবিধা পাবেন না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশ্বম্ত একটি সূত্রে শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

২০১০ সালের দেশের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধসের ফলে পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীদের জন্য পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত কোটা সুবিধা দেয়ার সুপারিশ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ২০১২ সাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের প্রতিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে ২০ শতাংশ করে কোটা সুবিধা প্রদান করে। এরপর থেকে প্রতিবছর বিএসইসি’র আবেদনের প্রেক্ষিতে কোটা সুবিধার মেয়াদ ১ বছর করে বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কোটার মেয়াদ বাড়িয়ে পরবর্তীতে আর বাড়ানো হবে না বলে ঘোষণা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোফখার উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয় শেষবারের মতো কোটা সুবিধার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ২০১২ সাল থেকে দেয়া হয়। এরপর ২০১৪ সালের জুনে এ কোটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় বিনিয়োগকারীদের দাবির মুখে কোটার মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০১৫ পর্যন্ত আনা হয়। পরবর্তীতে কোটার মেয়াদ ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এখন ক্ষতিগ্রস্তদের কোটার মেয়াদ আরও এক বছর অর্থাৎ ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করে বিএসইসি।

জানা যায়, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার ২০১১ সালের ২৩ নবেম্বর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। প্রণোদনা প্যাকেজে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিশেষ স্কিম দেয়ার জন্য ঐ বছরের ২৭ নবেম্বর ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফায়েকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

গঠিত কমিটি ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে বিভিন্ন সুপারিশসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দের কথা বলা হয়।

এরপর ওই বছরের ৫ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদন করার জন্য ১৮ মাস সময় বেঁধে দেয় (১ জুলাই ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩)। ৩০ এপ্রিল বিশেষ স্কিম কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করে বিএসইসির কাছে জমা দেয়।

এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ২০৪টি ব্রোকারেজ হাউসের ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৩ জন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সদস্যভুক্ত ১০৩টি ব্রোকারেজ হাউসের ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৭ জন এবং ২৫টি মার্চেন্ট ব্যাংকের ৩৯ হাজার ১২০ জন বিনিয়োগকারী রয়েছেন। এতে করে সর্বমোট ৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৮০ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী কোটা সুবিধার আওতায় আসেন।

২০১২ সালের ২৬ জুন মার্জিন ঋণের ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ এবং আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ কোটাসহ বিশেষ কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পরবর্তীতে ৩ জুলাই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের লোকসান সমন্বয়ের কথা চিন্তা করে কোটা বরাদ্দের সময়সীমা আরও ৬ মাস সময় বৃদ্ধি করা হয়। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে ২০ শতাংশ কোটা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে জানানো হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি আইপিওতে কোটা বরাদ্দ শুরু করে।