শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। মুলত ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হচ্ছে এমন গুজব সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয় একটি চক্র। ফলে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে কম দামেই নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। এ অবস্থায় শেয়ার বিক্রির চাপে অস্থিতিশীল হয়েছে পুঁজিবাজার।

যদিও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার তথ্য গুজব। ফ্লোর প্রাইস নিয়ে যারা কথা বলছেন, আসলে তারা গুজব ছড়াচ্ছেন। মুলত অদূর ভবিষ্যতে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পরিকল্পনাও আপাতত কমিশনের নেই। এছাড়া শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘ফ্লোর প্রাইস’ পদ্ধতি অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহম্মেদ জানিয়েছেন।

একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, টানা উত্থানের পর গত দুই কার্যদিবস পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। মুলত গুজব ছড়িয়েছে একটি চক্র পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। এই চক্রটি চিহ্রিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গুজবের কারণে পুঁজিবাজারে টালমাতাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন।

এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৫৮ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৭৭ পয়েন্ট। শুধু সূচক কমাই নয়, প্রায় সব কোম্পানির দাম কমেছে। এ কারণে আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এই দরপতনে ডিএসইর বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি অর্থাৎ পুঁজি উধাও হয়েছে ৩ হাজার ৪৫০ কোটি ২৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এর ফলে ছয় কর্মদিবস উত্থানের পর রোব ও সোমবার টানা দুদিন পুঁজিবাজারে দরপতন হলো।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদিন ডিএসইতে ৩৬৯টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৮টি কোম্পানির। এই ৩৮টির মধ্যে বিমা খাতের ৩০টি কোম্পানির শেয়ারে দাম বেড়েছে। আর সব খাতের শেয়ারের দাম কমেছে। ডিএসইর তথ্য মতে, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরু হয় সূচক ওঠানামার মধ্যদিয়ে। যা অব্যাহত ছিল লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টা। এরপর শুরু হয় শেয়ার বিক্রি চাপ, যা অব্যাহত ছিল লেনদেনের শেষ সময়ে পর্যন্ত।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৮.৫৮ পয়েন্ট বা ০.৯০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৩১.৩৪ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৫.৭৭ পয়েন্ট বা ০.৪০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪০৪.৫৭ পয়েন্টে। তবে শরিয়াহ সূচক ১৭.৭৯ পয়েন্ট বা ০.৭৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২৮৫.৭৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৮৯৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ২৯৬ কোটি ৩৯ লাখ।

ডিএসইতে আজ ৩৬৯ টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৮ টির বা ১০.৩০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ২৬৩ টির বা ৭১.২৭ শতাংশের এবং ৬৮ টির বা ১৮.৪৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১৭৭.৪৪ পয়েন্ট বা ০.৯২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৯০৪.২০ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৭৪ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪৯ টির, কমেছে ১৮৪ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১ টির দর। আজ সিএসইতে ২২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।