শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে চাপ নিতে পারলেও সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস চাপ নিতে না পারায় সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। তবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কর্তৃক ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর আজই প্রথমবারের মতো বড় পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। আজ প্রথমবারের মতো ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হওয়া কোম্পানির তালিকাও অনেক দীর্ঘ হয়েছে। এতে ক্রেতা সংকেটর কোম্পানির দৃশ্যপট আগের অবস্থানের দিকেই ফিরে গেছে।

এদিন বেশি সংখ্যক সিকিউরিটিজের পতনের কারণে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৪৫ পয়েন্ট। তবে আজও লেনদেন ছিল হাজার কোটির উপরে। গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার থেকে শেয়ারবাজারে নতুন ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন শুরু হয়। এরপর দীর্ঘ দিনের অমীমাংসিত ইস্যু ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা বা এক্সপোজার লিমিট ক্রয়মূল্যে গণনায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির খবর আসে। এই দুই সুখবরে বিনিয়োগকারীরা দারুণ একটি সপ্তাহ পার করেছে।

কিন্তু সরকার জ্বালানি তেলের রেকর্ড দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ায় সবকিছু বেতাল হয়ে পড়ে। ডিজেল লিটারে ৩৪ টাকা আর পেট্রল ৪৪ ও অকটেন ৪৬ টাকা বাড়ানোর খবরে অর্থনীতিতে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়। এই উৎকণ্ঠার মধ্যেও রোববার শেয়ারবাজারে মাত্র ৮ পয়েন্টের পতন হয়। প্রাথমিকভাবে বড় পতনের আশঙ্কা দূর হয়।

তবে লেনদেন টানা চার কর্মদিবসে এক হাজার কোটি টাকার বেশি থাকাটা ছিল বিনিয়োগকারীদের কাছে স্বস্তির অন্যতম কারণ। এতে বাজার সংশ্লিষ্টরা ভেবেছিলেন, শেয়ারবাজারে হয়ত তেমন প্রভাব পড়বে না। কিন্তু তাদের সেই প্রত্যাশা শেষ অবধি টিকলো না। আজ শুরুতে বাজার ইতিবাচক থাকলে শেষে বড় পতনের দিকে অগ্রসর হয়। এতে আগের সপ্তাহে ৩৩১ পয়েন্ট সূচক বাড়ার বিপরীতে চলতি সপ্তাহের দুই দিনে সূচক কমলো ৫৩ পয়েন্ট। বিনিয়োগকারীদের মনে তৈরি হলো নতুন আশঙ্কা।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৫.০৫ পয়েন্ট বা ০.৭১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৮.৯৫ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬.৫৯ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২১.৯৬ পয়েন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬৮.২৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২৩৭.৬০ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস হতে ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ১১৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

ডিএসইতে আজ ৩৮০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৩ টির বা ২৭.১০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ২১১টির বা ৫৫.৫৩ শতাংশের এবং ৬৬টির বা ১৭.৩৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১১৬.৮৬ পয়েন্ট বা ০.৬৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪১৮.১২ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৭৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৮৩টির, কমেছে ১২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৬টির দর। আজ সিএসইতে ১৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।