স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইস‘র) পক্ষ থেকে একের পর এক স্থিতিশীলতার আভাস দিলেও কিছুতেই পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। বরং দিন যতই যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের মাত্রা ততই বাড়ছে। তবে চলতি সপ্তাহ থেকে বাজার ভাল যাবে বলে মন্তব্য করেন বাজার বিশ্লেষকরা। মুলত ঈদ পরবর্তী পুঁজিবাজার দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।

তবে ঈদ পরবর্তী প্রথম সপ্তাহে মাত্র তিন কার্যদিবসে শেয়ারবাজার থেকে হারিয়ে গেছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। সপ্তাহটির প্রতিটি কার্যদিবসই পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। কমেছে সব সূচক। একই সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দরও কমেছে।

জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ১৮ হাজার ৭৭২ কোটি ৪৭ লাখ ৬৫ হাজার ৬৭৭ টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৫ হাজার ৯৬০ কোটি ৩৬ লাখ ৪০ হাজার ৯৬২ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন দুই হাজার ৮১২ কোটি ১১ লাখ ২৪ হাজার ৭২৫ টাকা কমেছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক হাজার ৯৬২ কোটি ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ১৪৪ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ৮১৩ কোটি ৮৫ লাখ ৯১ হাজার ৯৭০ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন এক হাজার ৮৫১ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ৮২৬ টাকা কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪২.৪৫ পয়েন্ট বা ০.৬৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩২৪.৫০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০.৫৪ পয়েন্ট বা ০.৭৬ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৯.৯২ পয়েন্ট বা ০.৮৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৭৭.৩৫ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২৭৩.৮৫ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৭টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৪টির বা ২৯.৪৬ শতাংশের, কমেছে ২৩৪টির বা ৬০.৪৭ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির বা ১০.০৭ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৫২ লাখ ০৩ হাজার ১১৯ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৪১ কোটি ৩২ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৫ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৭৯ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার ৪৪৬ টাকা কমেছে।

সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫৬.৪৩ পয়েন্ট বা ০.৮৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৯৭.৪০ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ৯৪.৯৯ পয়েন্ট বা ০.৮৪ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৯.৭৩ পয়েন্ট বা ০.০৭ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ১৪.৪১ পয়েন্ট বা ১.০৫ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক ১০.৮৭ পয়েন্ট বা ০.৯২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ১৪৩.২৫ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৬০৮.৩৭ পয়েন্টে, এক হাজার ৩৬৩.২৯ পয়েন্টে এবং এক হাজার ১৭৩.৮৯ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৬টির বা ২৯.১৮ শতাংশের দর বেড়েছে, ২১০টির বা ৬৩.৮৩ শতাংশের কমেছে এবং ২৩টির বা ৬.৯৯ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।