শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে দিন দিন শেয়ার সরবরাহ বাড়ছে। কিন্তু ভালো শেয়ারের অভাবে বাজার গতি পাচ্ছে না। এবার সেই অভাব দূর করতে পুঁজিবাজারে আসছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এ খবরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উচ্ছাস দেখা দিয়েছে। ওয়ালটন পুঁজিবাজারে আসার খবরে তারা খুব খুশি।

ওয়ালটনের শেয়ার সরবরাহের মধ্য দিয়ে বাজারে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তারা মনে করছেন। তবে কবে নাগাদ ওয়ালটন তালিকাভুক্ত হবে এ অপেক্ষার প্রহর গুনছেন বিনিয়োগকারীরা। কারন ওয়ালটনের মত কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে চিত্র পাল্টে যাবে। তেমনি বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা বাড়বে।

পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের মতে, পুঁজিবাজার চাঙা করতে প্রয়োজন ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করা। ভালো মানের কোম্পানি এলে পুঁজিবাজারকে বর্তমান তলানি অবস্থা থেকে দ্রুত সময়ে টেনে ওপরে তোলা সম্ভব হবে।

ইতিমধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় থাকা ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, ব্যবসা সম্প্রসারণ, পণ্য বিকেন্দ্রীকরণ, আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা ও আয়ের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস—ওয়ালটন আসলে পুঁজিবাজার উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের ঘরে ঘরে ওয়ালটন পণ্য রয়েছে। এই কোম্পানি দেশের সম্পদ। এমন একটি কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্তির পর বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন। ওয়ালটনের যে ‘কাট অব প্রাইস’ নির্ধারিত হয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা এখান থেকে নিশ্চিত মুনাফা অর্জনে সক্ষম হবেন আমি আশাবাদী।’

এদিকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি আজাদ আহসান বাচ্চু বলেন, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের যে ব্যবসায়িক পরিধি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা রয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। পাশাপাশি কোম্পানিটি যদি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো লভ্যাংশ প্রদান করতে পারে, তাহলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তারা যদি বাজারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে, তাহলে অন্যান্য আরো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে।

বিনিয়োগকারীদের আরেকটি সংগঠন পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. রুহুল আমিন আকন্দ বলেন, ‘প্রায় এক দশক আগে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ফোন পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয়েছিল। এরপর আরেকটি ভালো কোম্পানি হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে ওয়ালটন। শেয়ার বাজারের জন্য এটা অত্যন্ত ইতিবাচক হবে। ওয়ালটন আইপিওকে ঘিরে এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন একটি স্বনামধন্য এবং ফান্ডামেন্টাল বা মৌল ভিত্তি সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। তাদের পণ্য দেশের জনগণের কাছে অনেক সমাদৃত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ালটন বিডিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আইপিও’র মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসছে শুনে বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক উৎফুল্ল ও আনন্দিত।’

জানা গেছে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে বাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ মেটাতে ওই টাকা ব্যয় করা হবে। ইতিমধ্যে ওয়ালটনের শক্তিশালী আর্থিক প্রতিবেদনের নিরিখে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের বিডিংয়ে কোম্পানিটির কাটঅফ প্রাইস নির্ধারিত হয়েছে ৩১৫ টাকা।