শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বিডি ফাইন্যান্স লিমিটেড। ২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে বিদ্যমান সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘণের অভিযোগ তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী উদ্যোক্তা পরিচালক শেয়ার ক্রয় বিক্রির ক্ষেত্রে ঘোষণা দেয়ার বিধান থাকলেও কোম্পানিটি তা করেনি।

আর সব দেখেও নিরব রয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কর্তা-ব্যক্তিরা। যদিও কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিপালকদের শেয়ার ক্রয় বিক্রির ক্ষেত্রে কোনরুপ অনিয়ম সংগঠিত হয়নি। তবে এক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারীদের কোন তথ্য প্রদান করা হয়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা।

তারা বলছেন, ধরেই নিলাম যে কোম্পানির পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয় নাই। তাহলে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে শেয়ার হোল্ডিং বাড়লো কিভাবে! আর যদি এর অন্য কোন কারণ থেকে থাকে, তবে তা কেন বিনিয়োগকারীদের সামনে প্রকাশ করা হলো না।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ৩০ নভেম্বর ২০১৬ শেষে কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে ২৩.১৯ শতাংশ শেয়ার ছিল। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ শেষে যার পরিমাণ বেড়ে ২৫.১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সেই হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ারের পরিমাণ ১.৯৮ শতাংশ বেড়েছে।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে কোন ঘোষণাও দেয়া হয়নি। তাহলে কি ঘোষণা ছাড়াই কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা শেয়ার ক্রয় করেছেÑ দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের এমন প্রশ্নই তুলে ধরেছেন একাধিক বিনিয়োগকারী।

বিষয়টি জানতে বিডি ফাইন্যান্সের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে কথা হয় শেয়ার ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে থাকা আবদুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি দেশ প্রতিক্ষণকে জানান, ‘আমাদের কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়নি।

তবে পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ারের পরিমাণ কিভাবে বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা জানেন সম্প্রতি বিএসইসির পক্ষ থেকে পালিক ইস্যু রুলসে পরিবর্তন আনার ফলে বিডি ফাইন্যান্সের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে শেয়ার ধারণের পরিমাণ ৪৮.৫২ শতাংশ থেকে কমে ২৩.১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এতে করে বিএসইসির নির্দেশিত ২ সিসির আরেকটি আইনের ব্যত্যয় ঘটে।

অর্থাৎ বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মিলিতভাবে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর ওই নির্দেশনা মানতে আমরা পরিচালক নিয়েছি।

তিনি জানান, সম্প্রতি আমাদের বোর্ড মিটিংয়ে পাবলিক থেকে নতুন পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আনোয়ার ইস্পাতের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আর এই কারণে পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ারের পরিমাণ বেড়েছে।

তবে নতুন পরিচালক যুক্ত হলেও কেন তা বিনিয়োগকারীদের অবহিত করা হলো না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সব নিয়ম মেনেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি এবং তা বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসইকে অবহিত করা হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইন পরিপালন কিংবা ব্যবসায়ের উন্নয়নে নতুন কোন পরিচালক কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত করা হলে, সেটা কোম্পানির জন্য ভালো। আমরা এটাকে স্বাধুবাদ জানাই। কিন্তু শেয়ারহোল্ডারদেরও এ তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। আর যদি সেটা বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়, তবে তা কতোটুকু যুক্তি-সঙ্গত তা ভেবে দেখা উচিত।

তারা বলেন, আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিতে অবাধ তথ্য প্রাপ্তিতে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আর সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ায় উন্নয়ন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। যেহেতু পুঁজিবাজার খুবই সংবেদনশীল একটি খাত। তাই এখানে তথ্য আদা-প্রদানে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। তা না হয় বাজারের স্বাভাবিক গতি পথ বাধাগ্রস্ত হবে। দেশ প্রতিক্ষণ