summit powerশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সামিট পাওয়ারের সঙ্গে একই গ্রুপের তিন কোম্পানির একীভূতকরণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা এখন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। এই একীভূতকরণকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তাদের বরখাস্ত-পুনবর্হাল, একাধিক কমিটি গঠন, সামিট পাওয়ারের শেয়ারের লেনদেন বন্ধের মতো ঘটনা ঘটেছে।

৩ কোম্পানির সঙ্গে একীভূতকরণে গত ২৩ আগস্ট সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ারকে তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। আর এই তালিকাচ্যুতি নিয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দুই স্টক এক্সচেঞ্জের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অভিমত, সামিট পাওয়ার একীভূতকরণ কার্যক্রম আদালতের নির্দেশনা মেনে হয়েছে কি-না, তা যাচাই না করেই তালিকাচুতি করা হয়েছে।

এ ছাড়া সামিট পূর্বাঞ্চলের শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার বুঝিয়ে না দিয়েই কোম্পানিটিকে তালিকাচ্যুত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সামিট পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন চালু রাখার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এরই আলোকে গত বুধবার জরুরী ভিত্তিতে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। বৈঠকে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সামিট পাওয়ারের লেনদেন স্থগিত করে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। ২৮ আগস্ট থেকে তা কার্যকর হয়েছে।

পাশাপাশি সামিট পূর্বাঞ্চলের তালিকাচ্যুতি নিয়ম অনুযায়ী না হওয়ায় দুই স্টক এক্সচেঞ্জের শীর্ষ ৬ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ডিএসইর যে ৩ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয় তারা হলেন- চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) একেএম জিয়াউল হাসান খান, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নিজাম উদ্দিন ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।

অপরদিকে সিএসইর ভারপ্রাপ্ত চিফ রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মদ সামসুর রহমান, মার্কেট অপারেশনের প্রধান মরতুজা আলম ও লিস্টিং বিভাগের প্রধান সৈয়দ মমিনুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার আবার জরুরী সভা করে বিএসইসি। সভায় একীভূতকরণ ইস্যুতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলমকে কমিটির প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- পরিচালক মনসুর রহমান, মোহাম্মদ রেজাউল করিম ও উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম মজুমদার। এই কমিটিকে আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এদিকে শনিবার ডিএসইর এক জরুরী সভায় বরখাস্ত হওয়া চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) একেএম জিয়াউল হাসান খান ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াকে পুনর্বহাল এবং উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। পাশাপাশি ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ডিএসইর প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আব্দুল মতিন পাটোয়ারীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সিটিও জিয়াউল করিম ও এজিএম ওয়াহিদুজ্জামান। এ কমিটিকে আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় বিএসইসির নির্দেশনা মেনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ৩ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। তবে শনিবার (২৭ আগস্ট) সিএসইর অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় স্টক এক্সচেঞ্জটির পরিচালকদের সমন্বয়ে গঠিত রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কমিটি (আরএসি) ওই আদেশ বাতিল করেছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ডিএসইর এক পরিচালক জানান, কমিশন শুরুতে ডিএসইর ৩ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে বিষয়টি বাড়াবাড়ির দিকে চলে যাওয়ায় বিএসইসি নমনীয় হয়। এক্ষেত্রে ৩ জনকে বাদ না দিয়ে আপাতত দৃশ্যমান হয় এমন কিছু করার জন্য বলে। এক্ষেত্রে নিজাম উদ্দিন আহমেদকে ওএসডি করতে বলা হয়।