titas gasশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির আয় বাড়ানোর বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের ‘তথাকথিত’ বলায় তোপের মুখে পড়েন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান এআর খান।

গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য ও তিতাস গ্যাসের বিতরণ চার্জ পুনর্র্নিধারণের বিষয়ে গত দুদিন গণশুনানি করে বিইআরসি। দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় তিতাস গ্যাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীসহ পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

গণশুনানির একপর্যায়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, তিতাসের ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা সরকারের হাতে। বাকি ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা।

বিইআরসি তিতাসের বিতরণ চার্জ তথা আয় কমিয়ে দেয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানির ব্যাপারে এমন অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও মুখ ফিরিয়ে নেন, যা শেয়ারবাজারের জন্য ক্ষতিকর।

জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান এআর খান বলেন, এটি শেয়ারবাজার নিয়ে আলোচনার ফোরাম নয়। এখানে আমরা গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসেছি। ‘তথাকথিত’ বিনিয়োগকারীদের বিষয়ে আলোচনার অন্য জায়গা করুন। সেখানে আমরা থাকব।

তার এ বক্তব্যের জেরে উপস্থিত বিনিয়োগকারীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। বিনিয়োগকারীদের ‘তথাকথিত’ বলায় বিইআরসি চেয়ারম্যানকে ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলা হয়। একজন মঞ্চে উঠে বলতে থাকেন, আপনি এখনই ক্ষমা চান, অন্যথায় আমরা আপনাকে কথা বলতে দেব না।

এ সময় চেয়ারম্যান বলেন, আমার ভুল হলে আমার কথা ফিরিয়ে নেব। কিন্তু আপনারা আমার কথা শুনুন। আমি ‘তথাকথিত’ বলতে ৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে বুঝাইনি। আমি তথাকথিত বলতে বুঝিয়েছি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের, যাদের কারণে দেশীয় বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এর পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। বিইআরসির টেকনিক্যাল কমিটি তিতাস গ্যাসের বিতরণ চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, এক বছর আগে তিতাস গ্যাসের আয়ের মূল উত্স বিতরণ চার্জ কমিয়ে দেয় বিইআরসি। এতে কোম্পানিটির আয় ও মুনাফা কমে যায়। হঠাত্ই নিয়ন্ত্রকদের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে অনেক বিনিয়োগকারী, বিশেষ করে বিদেশীরা স্টক এক্সচেঞ্জে তিতাস গ্যাসের শেয়ার বিক্রি করে দেন। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দর ৭৭ থেকে ৪৫ টাকার নিচে চলে আসে। পরবর্তীতে কোম্পানির অভিষ্যত্ ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষার জন্য বিতরণ চার্জ বাড়ানোর জন্য জ্বালানি নিয়ন্ত্রকদের কাছে আবেদন করে তিতাস গ্যাস।

ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের অ্যাসোসিয়েশনসহ বাজার-সংশ্লিষ্টরাও একই দাবি জানান। তবে রাজস্ব চাহিদা মেটাতে গত বছর হ্রাসকৃত বিতরণ চার্জই যথেষ্ট উল্লেখ করে তা আর বাড়ানোর প্রয়োজন নেই বলে মত দিল বিইআরসির টেকনিক্যাল কমিটি।