share netingশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে হতাশায় দিন কাটছে বিনিয়োগকারীদের। কোন ক্রমেই বাজারের উপর আস্থা রাখতে পারছে না বিনিয়োগকারীরা। বরং দিনের দিনের দিন লোকসান বাড়ছে। এ যেন এক মরন বাজার। এ থেকে উত্তরনের কোন উপায় নেই। বাজার পরিস্থিতি ক্রমাগত নিম্নমুখী প্রবনতার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে নিটিং করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা।

ঊর্ধ্বমুখী দরে কেনা শেয়ারে লোকসান কমাতে কম দরে একই শেয়ার পুনরায় কিনে ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো সফলতা পাচ্ছেন না তারা। অধিকাংশ সময় কম দরে ক্রয়কৃত শেয়ার বিক্রয় পরিপক্ক হওয়ার দিন বাজারে নিম্নমুখী প্রবনতা থাকায় নতুন করে লোকসান দিতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ঊর্ধ্বমুখী দরে কেনা একই শেয়ারের দর ক্রমাগত কমতে থাকলে তারা লোকসান কমানোর জন্য ওই শেয়ার কম দরে পুনরায় ক্রয় করেন। অনেক সময় একই দিনে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী দরে কোনো শেয়ার বিক্রি করে দিনের শেষভাগে দর পড়ে গেলে একই শেয়ার ক্রয় করেন।

এভাবে দীর্ঘদিন ধরে তারা লোকসান সমন্বয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু পড়তি দরে শেয়ার কিনে বিক্রয় করার সময় দেখা যায় বাজারে নিম্নমুখী প্রবনতা। বাধ্য হয়ে কম দরে একই শেয়ার আরো ক্রয় করেন।

কিন্তু ক্রয়কৃত শেয়ার বিক্রয়যোগ্য হওয়ার দিন পুনরায় দর পড়তে দেখা যায়। ফলে নিটিং করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। বাজারে একটানা মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। পুঁজিবাজারে স্মরনকালের ধ্বস ২০১০ সালের পর লোকসান সমন্বয় করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে, বছরে লেনদেনের টানা নিম্নমুখী প্রবণতায় ধারাবাহিক ভাবে কমছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর। এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি নতুন বিনিয়োগে আসা বিনিয়োগকারীদের নিটিং-এ সুফল মিলছে না। উত্থানের সঙ্গে পতনের স্বাভাবিকতা না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের বিনিয়োগের পর বাই প্রাইজের নিচে থাকা শেয়ারগুলোর দর সমন্বয় করার জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিটিং করে থাকেন। সাধারণত বাজারের ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নতুন শেয়ার ক্রয় করে নিটিং করার চেষ্টা করে।

ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেনের মিশ্র প্রবণতায় নতুন তালিকাভুক্ত একমি ল্যাবের উপর ভিত্তি করে সার্বিক লেনদেন বাড়লেও কমেছে মূল্য সূচক ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারের লেনদেনের স্বাভাবিকতা ব্যহত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের লোকসানের অংক বড় হচ্চে। তাদের মতে, উত্থানের বাজার নতুন বিনিয়োগ নিটিংয়ের জন্য সঠিক সময় নয়। বরং পতনের বাজারে শেয়ার ক্রয় করে নিটিং করলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, লোকসান কাটানোর আশায় পুনরায় শেয়ার ক্রয় করেও সফলতার মুখ দেখছেন না তারা। বরং সময়ের সঙ্গে তাদের লোকসানের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। লোকসান কমানোর আশায় দফায় দফায় বিনিয়োগ করে লোকসানের পরিমাণ আরো বেড়েছে।

২০১০ সালের ধসের কারণে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর পুঁজি আটকে গেছে। বিশেষ করে ব্যাংকও আর্থিক খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের অনাগ্রহের কারণে সে সময় এ খাতের বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশই লোকসান কমানের জন্য হাতে শেয়ার ধারণ করার পাশাপাশি পুনরায় বিনিয়োগ করে আরও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এদিকে, সেকেন্ডারি মার্কেটে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ার আকাশচুম্বি হলেও পরবর্তীতে তা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষন হারাচ্ছে। ফলে নতুন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেও লোকসান বাড়ছে।

এম সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী মহসিন সুজন জানান, পুরাতন শেয়ারে নতুন করে বিনিয়োগ করতে গিয়ে বারবারই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। তাই নিজের স্বার্থেই এখন বিনিয়োগ থেকে দূরে আছি।