adalotশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: এইমস ফার্স্ট গ্যারান্টেড ও গ্রামীণ ওয়ান: স্কিম ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের অবসায়ন-সংক্রান্ত রিটের পূর্ণাঙ্গ শুনানি আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৫ নম্বরে রয়েছে এ মামলাটি।

গত ২৯ মার্চ শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও আদালত বন্ধ থাকায় তা আজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে রিটের বাদীপক্ষ। এদিকে আদালতে রিটের চূড়ান্ত শুনানি এবং রায়ের আগেই রূপান্তর-অবসায়ন প্রক্রিয়া শেষে ইউনিটহোল্ডারদের প্রাপ্য অর্থ বিতরণের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আদালত।

গত ১২ মে রিটকারীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এ স্থগিতাদেশ দেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আজ শুনানির কথা জানানো হয়। এর আগে আপিল বিভাগ কর্তৃক হাইকোর্টের রায় স্থগিতের পরিপ্রেক্ষিতে ফান্ড দুটিকে অবসায়নের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

নির্দেশনা অনুযায়ী ২ মার্চের পর স্টক এক্সচেঞ্জে এইমস ফার্স্ট গ্যারান্টেড ও গ্রামীণ ওয়ান: স্কিম ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেনও বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ফান্ড দুটির ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান উপস্থাপিত নিরীক্ষিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এর অবসায়নের অনুমতি দেয় কমিশন।

একই সঙ্গে ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠানকে ইউনিটহোল্ডারদের প্রাপ্য অর্থ প্রদানে সাত কার্যদিবস সময় বেঁধে দিয়ে ৪ মে নতুন নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। তবে রিটের চূড়ান্ত শুনানির আগেই অবসায়ন প্রক্রিয়া শেষ করার উদ্যোগ নেয়ায় আদালতের নির্দেশে অর্থ বিতরণ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে এইমস ফার্স্ট গ্যারান্টেড মিউচুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির (বিজিআইসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আহমেদ সাইফুদ্দিন বলেন, বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর রূপান্তর-অবসায়ন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

ফান্ডগুলোর কার্যক্রম এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন শুধু ইউনিটহোল্ডারদের মাঝে অর্থ বিতরণ বাকি। মূলত আপিল বিভাগের নির্দেশে অর্থ বিতরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার শুনানি শেষে ট্রাস্টি হিসেবে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রস্তুত রয়েছে বিজিআইসি ।

এদিকে রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্যেই সম্প্রতি উচ্চ আদালতে এইমস ও গ্রামীণ ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ড বিষয়ে আরো একটি রিট হয়েছে। মূলত রূপান্তর-অবসায়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা পরিচালনার আইনি খরচ ও অবসায়ন ফি ফান্ড থেকে দেয়ার বিএসইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এ রিট আবেদন করা হয়।

রিটের শুনানি শেষে এ অর্থ প্রদানে তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। একই সঙ্গে বিএসইসির এ সিদ্ধান্তকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করা হয়েছে। ২৪ মে’র মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত। এছাড়া ফান্ডের লভ্যাংশের বিপরীতে কর দাবি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ট্রাস্টিকে চিঠি পাাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ইউনিটের অভিহিত মূল্য বাদ দিয়ে সম্পদমূল্যের বাকি অর্থকে লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচনা করেছে এনবিআর।

প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি মিউচুয়াল ফান্ডের রূপান্তর-অবসায়ন ইস্যুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ২৪ মার্চ পূর্ণাঙ্গ শুনানির দিন ধার্য করা হয়। সেদিন মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর রূপান্তর-অবসায়নে বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এর পরিপ্রেক্ষিতে এইমস-গ্রামীণের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) পরিচালিত কয়েকটি ফান্ডেরও রূপান্তর-অবসায়নে নতুন নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা ২০০১-এর ৫০ (খ) ধারায় বলা আছে, কোনো মেয়াদি স্কিমের মেয়াদ এবং পরিমাণ  স্কিম ঘোষণার সময়ই নির্ধারণ করতে হবে।

তবে শর্ত থাকে যে, স্কিমের মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে এক বছর আগে ইউনিট মালিকদের বিশেষ সভায় উপস্থিত তিন-চতুর্থাংশ ইউনিটধারীর সম্মতিতে ফান্ডের মেয়াদ অনুরূপ একটি মেয়াদের জন্য বর্ধিত করা যাবে।

তবে ২০১০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি কমিশন মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ ও অবলুপ্তি-সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে, যাতে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করার পাশাপাশি যেসব মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ এরই মধ্যে ১০ বছর অতিক্রম করেছিল, সেসব ফান্ডকে ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবলুপ্তির নির্দেশ দেয়া হয়। অবশ্য নানা কারণে এর বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়।