tribunalশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এখন আর কোন মামলা নেই। বিভিন্ন আদালতে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত পাঁচ শ’র বেশি মামলা থাকলেও হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ ও আপীলের কারণে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি করার মতো মামলার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সব মামলাই ট্রাইব্যুনালে বিচার করা যায় না। শুধুমাত্র ফৌজদারি মামলার বিচার ট্রাইব্যুনালে করা হয়ে থাকে। এর বাইরে সার্টিফিকেট মামলার বিচার সেখানে করা সম্ভব নয়।

সূত্র জানায়, গত বছরের ২৭ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে শেয়ার কেলেঙ্কারিসহ সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কারণে দায়েরকৃত মামলার হালনাগাদ তথ্য চেয়ে বিএসইসিকে চিঠি দেয় মন্ত্রণালয় এবং বাজারে গতিশীলতা আনতে পুঁজিবাজার বিষয়ক মামলাগুলো দ্রুত ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

জানা গেছে, সর্বশেষ বিচারাধীন থাকা ১৯৯৬ সালের প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের শেয়ার জালিয়াতি মামলার (মামলা নং ২/২০১৫) আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল মামলাটির ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ আদালত, যা পুঁজিবাজার ট্রাইব্যুনালে ২৮ এপ্রিল দাখিল করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

ফলে ট্রাইব্যুনালে মামলাটির কার্যক্রম ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকছে। উল্লেখ্য, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১৫ সালের জুনে প্রথমবারের মতো চালু হয় বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। এ পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে ছয়টি মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি মামলায় সাজা ও দুটি মামলায় খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে ২৪টি মামলা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকি ১৮টির মধ্যে দুটি মামলা দায়রা জজ আদালতে ফেরত গেছে। আর বাকি ১৬টি মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে কিছু কিছু মামলায় রুলস নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। ফলে ট্রাইব্যুনালে কার্যক্রম পরিচালনা করার মতো আর মামলা নেই।

জানা গেছে, ওয়ান্ডার ল্যান্ড টয়েস লিমিটেডের বিরুদ্ধে করা মামলাটির (মামলা নং ১৫/২০১৫) উচ্চ আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ ২৫ এপ্রিল শেষ হয়। এর আগেই আসামিপক্ষ স্থগিতাদেশের সময় বাড়ানোর আবেদন করলে আরও এক বছর সময় দেয় উচ্চ আদালত। এছাড়া চিটাগং সিমেন্ট ক্লিংকার গ্রিন্ডিং কোম্পানির মামলার স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১৯৯২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন আদালতে ৫৩৫টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে ২৫৩টি মামলা বিচারাধীন। এছাড়া নিম্ন আদালতে করা অন্যান্য মামলার অধিকাংশই হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।