dse-cseআমিনুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাব আর তারল্য সঙ্কটের কারনে টালমাতাল পরিস্থিতি বিরাজ ছিল। অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর লোকসানের যাতাকালে পিষ্ট হয়ে গেছেন। ধারাবাহিকভাবে কমছে লেনদেন প্রবাহ। অর্থ সঙ্কটে ৩০০ কোটির ঘরেই ঘুরছে লেনদেন।

টানা দরপতনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এমনিতেই হতাশ ছিলেন। এরি মাঝে তারা ঘন মেঘের আড়ালে আশা জাগানিয়া সূর্য কিরণ দেখতে পাচ্ছেন। কারণ গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন উভয়ই বেড়েছে। আর এই কারণেই বাজারের এমন সম্ভাবনাময় অবস্থানকে ওপুঁজিবাজারে কালো-মেঘে রবির কিরণহ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তাদের মতে, পুঁজিবাজার বিস্ময়কর আকাশের মতো। আকাশ যেমন ক্ষণে ক্ষণে তার রূপ বদলায়। কখনো কাঠ-ফাটা রোদ আবার কখনো কালো-মেঘে। ঠিক তেমনি দেশের পুঁজিবাজার। কখনো আশা আবার হতাশা। এ হতাশার মধ্যেও আশার আলোর অপেক্ষায় দিনের পর দিন তাকিয়ে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। হতাশার মাঝেও বাজারে ঘটছে নতুন নতুন রের্কড।

তবে গত সপ্তাহে সরকারের এক নির্দেশনায় পাল্টে গেছে পুঁজিবাজারের চিহ্র। সরকারের এক নির্দেশনায় গত  বৃহস্পতিবারই পুঁজিবাজারে সুচক ও লেনদেন বাড়ছে। নতুন সপ্তাহ শুরু হলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাজার শুধু সামনের দিকে আগাবে এই আশা বাদ ব্যক্ত করেছেন অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা।

র‌্যাপিড সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী ফেরদৌস আহম্মেদ বলেন, আর কত ধৈর্য্য ধারন করবে। কত করতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। সরকারের নানামুখী সিদ্ধান্তের পরও বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না।তবে আমরা মুখে নয় এবার বাস্তবে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল দেখতে চাই।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী ইসমাত জেরিন খান শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ব্যাংকগুলোর বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময় একবারে বাড়ানো সম্ভব না হলেও যদি প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর বাড়ানো যায় তাও বাজারের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে।

তিনি আরো বলেন, নেগিটিভ ইকুইটিতে প্রতিদিনই বাড়ছে সুদের হার। আর এ কারণে শেয়ার বাজারে কোম্পানি গুলোর দরে নেতিবাচক প্রবণতা বেড়েই চলছে। বাজারে এই মুহূর্তে লোকসান সমন্বয় করতে না পারলে আগামী দিনগুলোতে বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পারে বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘‘বাজার তার আপন গতিতে চলছে। বাজার স্বাভাবিক হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার। সরকার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজার উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছে। বাজার স্বাভাবিক হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার। এক্ষণি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উত্তম সময় বলে তিনি মনে করেন।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজারে এ দুরদশা থেকে উত্তরনের জন্য সরকারহ নিয়ন্ত্রক সংস্থার আরো আন্তরিকতার প্রয়োজন। কারন বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থার সংকট প্রকট। এ সংকট দুর করতে যা যা করনীয় তা করতে হবে। এছাড়া বাজারের এ দুরাবস্থা থেকে উত্তোরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে মানসম্পন্ন কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করতে হবে। তেমনি নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পুঁজিবাজারে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও চাহিদা অনুসারে বিনিয়োগ করতে পারছেন না। আস্থাহীনতা আর লোকসানের ভয়ে সেকেন্ডারি মার্কেটে আসছেন না নতুন বিনিয়োগকারী। ফলে বাজারে দেখা দিয়েছে অর্থ সঙ্কট। আর সে কারণেই বাজার উন্নয়নে সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগ, পদক্ষেপ সত্ত্বেও ভেস্ত যাচ্ছে।