dse-cseআফজাল হোসেন লাভলু, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার টানা দর পতনের পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্বাসে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। তবে বর্তমান বাজারের প্রতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা পুরোপুরি আস্থা পাচ্ছেন না। আগামী সপ্তাহে বাজার স্থিতিশীলতার রুপ নিলেও বিনিয়োগকারীরা আস্থা ফিরে পাবেন।

DSEX এর স্ট্রংসাপোর্ট জোন ৪৩৭০-৪৩০০ (চিত্রে আকাশী রঙে স্ট্রং সাপোর্ট জোন দেখানো হয়েছে)। সেই সাপোর্ট জোনের শেষ প্রান্ত থেকে ইনডেক্স উর্দ্ধমূখী হয়েছে এবং দিন দিন ইনডেক্স বৃদ্ধির সাথে সাথে ভলিউম (লেনদেন) বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটি একটি ভাল বাজারের জন্য ইতিবাচক দিক বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। ইনডেক্স যখন ডাউন ট্রেন্ডে থাকে তখন একটানা ১০-১৫ দিন ডাউন হয় না বা লাল ক্যান্ডেল তৈরী করে না। ৫-৭ দিন লাল ক্যান্ডেলের পর ২-৩ দিন সবুজ ক্যান্ডেল তৈরী করে পুনরায় লাল ক্যান্ডেল তৈরী হয়।

গত তিন দিনের সবুজ ক্যান্ডেল কি সেই পতনের ধারাবাহিকতার অংশ না কি ইন্ডেক্স শুভ সূচনা করতে যাচ্ছে? সে প্রশ্নের উত্তর পেতে ২/১টা দিন দেরি করতে হবে। যদি ইনডেক্স শুভ সুচনা করে তাহলে টেকনিক্যাল এনালিসিসে কয়েকটি বৈশিষ্ঠ্য চোখে পড়তে হবে। যা আপট্রেন্ডের বৈশিষ্ট্য হিসাবে পরিচিত।

এছাড়া গত সপ্তাহে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার পথে এগুচ্ছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা। তারা গত সপ্তাহের বাজার পরিস্থিতি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তেমনি পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ২০ শতাংশ কোটার সময়সীমা ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। এর প্রভাব বাজারে পড়বে বলে তারা মনে করেন।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস ও পঞ্চম কার্যদিবস শেয়ারবাজার ইতিবাচক ধারায় ছিল। বাড়ছে বেশিরভাগ কোম্পানি শেযার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর। যা গত দুই  দিনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। টাকার পরিমাণে লেনদেনও গতকালের তুলনায় গতিশীল। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পুঁজিবাজারে অনেকদিন পরে স্থিতিশীলতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, পুঁজিবাজার শক্তিশালী হলে গোটা জাতিকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না । বর্তমান বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে একটি শক্তিশালী স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না বলে তিনি মনে করেন।

বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট আছে বলে মনে হয় না। তবে যেটুকু সংকট রয়েছে তা বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব সৃষ্টি বলে মনে করেন তিনি। এই বাজারে কার ভুমিকা কতটুকু তা পরিস্কার থাকা উচিত। বিশেষ করে ট্রেকহোল্ডারদের দায়িত্ব পরিস্কার থাকতে হবে। সেটা না থাকলে আস্থার সংকট বেড়ে যাবে। যত বেশি সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া যাবে; তত আস্থার সংকট দুর হবে।

বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি। সরকার সহ নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত পুঁজিবাজারকে দ্রুত স্থিতিশীল করা। ২০১০ সালের পর বাজার যতবার ধস নামছে শতবারই নানা আশ্বাস দিলেও বাজার স্থিতিশীল করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যর্থ হয়েছে। এখন দেখি বাজার স্থিতিশীলতার কতটা রুপ নেয়।

বিএসিইসি কমিশনের মুখপাত্র এম. সাইফুর রহমান সম্প্রতি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালকে বলেছেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। শেয়ারবাজার খুব দ্রুত গতিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে অর্থ মন্ত্রনালয়ের জারি করা ১৫ দফা নির্দেশনা সংক্রান্ত চিঠি প্রাপ্তি এবং তার আলোকে কাজ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এছাড়া বিএসইসি যদি ওই চিঠির সবগুলো নির্দেশনা ধরে ধরে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালায় তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই বাজার একটি কাঙ্খিত ইতিবাচক অবস্থানে গিয়ে পৌছাবে বলে তিনি মনে করেন।