saiham cotton

Saiham Cotton LTD

আমিনুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ব্যবসা সম্প্রসারণ ঋণ পরিশোধের মাধ্যমে বেশি লাভবান হওয়ার আশায় পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করছেন বিভিন্ন কোম্পানির উদ্যোক্তারা কিন্তু মূলধন নেওয়ার পর কোম্পানির মুনাফার হার কমছে ফলে পুঁজিবাজার উদ্যোক্তাদের উপকারে আসছে না তবে মুনাফার পরিমাণ বেশি দেখিয়ে পুঁজিবাজার থেকে টাকা নেওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে আরো মূলধন সংগ্রহের পরও থেকেই বস্ত্র খাতের একটি কোম্পানির মুনাফা কমতে দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের অর্থে ব্যয়বহুল ব্যাংকঋণ পরিশোধ কারখানা সম্প্রসারণের পরও কোম্পানিগুলোর করপরবর্তী মুনাফা কমেছে। ২০১২ সালে তালিকাভুক্ত সায়হাম কটন আইপিও প্রসপেক্টাস এবং সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে

সাধারণত ব্যবসা সম্প্রসারণ, নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ, চলতি মুলধন যোগান কিংবা ব্যাংক ঋণ পরিশোধে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে কোম্পানিগুলো। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করার পর স্বাভাবিকভাবেই কোম্পানিগুলোর আয় বাড়ার কথা। কিন্তু উল্টো আয় কমছে

বিদেশে পণ্য রফতানিতে কর, বন্ড তুলনামূলক কম সুদে ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকে দেশের বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বড় অঙ্কের মূলধন সংগ্রহ করছে কোম্পানিগুলো, যা ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যয় হচ্ছে। সহজ শর্তে বাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ সরকারের দেয়া বিভিন্ন সুবিধার পর বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফা বৃদ্ধির কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিগুলোকে অর্থ সংগ্রহের অনুমোদন দিয়ে থাকে। অর্থ সংগ্রহের পরও আয় কমে যাওয়ায় কোম্পানিগুলোর আইপিও অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে

 বিশেষ করে প্রিমিয়ামে যে সব কোম্পানি বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছে ওইসব কোম্পানির মৌলভিত্তি অনেক দুর্বল মনে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ রয়েছে, পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের পূর্বেউইন্ডো ড্রেসিং’-এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে থাকে। এতে কোম্পানিগুলো প্রকৃত আর্থিক অবস্থার চেয়ে ভালো অবস্থা দেখিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো প্রিমিয়াম মূল্যে (অভিহিত মূল্যের চেয়ে বেশি দরে) বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে

মুনাফার পরিমাণ বেশি দেখিয়ে পুঁজিবাজারে আসায় আইপিওর পরে কোম্পানিগুলোর এমন অবস্থা বলে জানান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ। পুঁজিবাজারে আসার পর অনেক কোম্পানি লভ্যাংশ দেওয়ার ভয়ে মুনাফা কম দেখায় বলেও জানান তিনি। এই সমস্যা দূরীকরণে বিএসইসি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন আবু আহমেদ

তিনি আরও জানান, বর্তমানে কোম্পানি অডিটরস মিলে ধাপ্পাবাজি করে আইপিওতে আসছে। তাই কোম্পানির দেওয়া হিসাব তিনি নিজেও বিশ্বাস করেন না এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা করে না বলে জানান তিনি

কোনো কোম্পানির ব্যবসায়িক ফলাফলের সাথে বিএসইসির কোনো সম্পক্র্ নেই বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মূখপাত্র নির্বাহী পরিচালক এম. সাইফুর রহমান। একটি কোম্পানির সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত দেখে বিএসইসি মূলধন তোলার অনুমোদন দেয় কীনা?

এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোম্পানির অপারেশনের উপর নির্ভর করে মুনাফা। আর সেই দায়িত্ব বিএসইসির নয় এবং বিষয়ে বিএসইসির কেউ মন্তব্য করেন না বলে জানান সাইফুর রহমান

সায়হাম কটন : ব্যবসায়িক পরিধি বৃদ্ধির জন্য আসা কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ২০ টাকা মূল্যে (প্রিমিয়াম ১০ টাকাসহ) ৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে। শেয়ারপ্রতি .০২ টাকা আয় নিয়ে আসা কোম্পানিটির ২০১২ সালে .৪৮ টাকা, ২০১৩ সালে .৯২ টাকা, ২০১৪ সালে .৪৮ টাকা ২০১৫ সালে .৪০ টাকা ইপিএস হয়েছে। হিসাবে তালিকাভুক্তির বছরে কোম্পানিটির গড় ইপিএস হয়েছে .৮২ টাকা

আয় কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সায়হাম কটনের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে জানান, কারখানা সম্প্রসারণ আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে পুরনো যন্ত্রপাতি বদলে নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে। কারণে সে সময় কোম্পানির উইভিং ইউনিটের উত্পাদন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে রেভিনিউ কমে যায়, যা মুনাফায় প্রভাব ফেলে