২২ জুনের মধ্যে ইটিএফ ও ডেরিভেটিভস চালুর তাগিদ
শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) নির্ধারিত সময়ে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) ও ডেরিভেটিভস চালুর তাগিদ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের ২২ জুনের মধ্যে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) বিধিমালা ও ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস নীতিমালা প্রকাশের জন্য তাগিদ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী এ সময়ের মধ্যে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তা প্রণয়নে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাজে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে অর্থমন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বিএসইসিকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তাগিদ দেয়া হয়েছে।
বিএসইসিতে পাঠানো চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের ২২ জুনের মধ্যে ইটিএফ বিধিমালা ও ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস নীতিমালার গেজেট প্রকাশের শর্ত রয়েছে। এ অবস্থায় বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির বিএসইসি-সম্পর্কিত ইটিএফ বিধিমালা ও ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস নীতিমালা নির্ধারিত সময়ের আগেই তা প্রণয়ন করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
ওই দুটি প্রডাক্ট চালুর বিষয়ে বিএসইসি এক বছর আগে কাজ শুরু করলেও শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির সর্বশেষ অবস্থানে সন্তুষ্ট নয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ডেরিভেটিভস নীতিমালা ও ইটিএফ-সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের কাজের অগ্রগতিও উল্লেখযোগ্য নয় বলে মনে করে মন্ত্রণালয়। যদিও ২২ জুন পর্যন্ত সময় রয়েছে।
জানা গেছে, ডেরিভেটিভস নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময় চেয়েছে কমিশন। আর ইটিএফ বিধিমালা বেঁধে দেয়া সময়ের আগেই চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করতে পারবে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে। এর সঙ্গে মার্কেট মেকার রুলস প্রণয়নের বিষয়টি জড়িত রয়েছে। তবে স্বল্প সময়ে একাধিক বিধিমালা ও নীতিমালা প্রণয়নের সময়সীমা নির্ধারিত থাকায় কমিশনের ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো স্টক এক্সচেঞ্জের নির্দিষ্ট সূচক, সূচকভুক্ত কোম্পানি কিংবা নির্দিষ্ট খাতের শেয়ারে বিনিয়োগের লক্ষে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইটিএফ চালু করতে যৌথভাবে কাজ করছে দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জগুলো। বিদ্যমান মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালার আওতায় বিশেষ ধরনের এ সামষ্টিক তহবিল চালু বা পরিচালনা সম্ভব না হওয়ার কারণেই আলাদা বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কারণ বিশ্বের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রকদের সংঘ ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসসিও) সিদ্ধান্ত অনুসারে, ইটিএফ ও মিউচুয়াল ফান্ডের মতো অন্যান্য সমষ্টিগত বিনিয়োগ তহবিলের (সিআইএস) জন্য আলাদা বিধিমালা থাকতে হবে সদস্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর।
প্রসঙ্গত, উন্নততর ট্রেডিং প্লাটফরম চালুর পর ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে ইটিএফ চালুর আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয় ডিএসই। এ লক্ষ্যে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর কমিশনের নির্বাহী পরিচালক হাসান মাহমুদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বিএসইসি। গঠিত কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরির পাশাপাশি ইটিএফ বিষয়ে অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্টক এক্সচেঞ্জ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা পরিদর্শন করেন।
ইটিএফ সম্পর্কে ধারণা নিতে চলতি বছরের প্রথম দিকে বিএসইসির কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামীর নেতৃত্বে একটি দল হংক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশে ভ্রমণও করেছে। তবে ইটিএফের আকার কত হবে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি কমিশন। জানা গেছে, ইটিএফের আকার সর্বোচ্চ ১০০ কোটি ও সর্বনিম্ন ১০ কোটি টাকা রাখা হতে পারে। বর্তমানে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের আকার ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা।