dse-cseশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০১৫ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে মুনাফায় প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে রয়েছে সিরামিক, ব্যাংক ও ওষুধ-রসায়ন খাত। বর্ষা মৌসুমের কারণে সিমেন্টসহ অবকাঠামো খাতের কোম্পানিগুলো পিছিয়ে থাকলেও ভাল করেছে প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে ভ্রমণ-অবকাশ ও আবাসন-সেবা, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ মুনাফা কমেছে অধিকাংশ খাতের। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ চিত্র উঠে আসে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি- সেপ্টেম্বর সময়ে মুনাফায় ইতিবাচক ধারায় ছিল সিরামিক, ব্যাংক, ওষুধ-রসায়ন, প্রকৌশলসহ ছয়টি খাত। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তালিকায় থাকা মোট ১৭টি খাতের মধ্যে মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমেছে ১১টির।

মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে সিরামিক খাত। প্রথম নয় মাসে এ খাতের মুনাফা এক বছর আগের তুলনায় ২৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে। মূলত বড় মূলধনী আরএকে সিরামিকসের উচ্চ মুনাফার সুবাদেই মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে এক নম্বরে উঠে আসে এ খাত।

গত বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ব্যাংকিং খাত। মূলত অনাদায়ী ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণের পরিমাণ কমে আসায় দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। তবে বিনিয়োগের রিটার্ন বিবেচনায় পিছিয়ে এ খাত। প্রথম নয় মাসে ব্যাংকিং খাতের মুনাফায় ২৭ দশমিক ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও এ খাতের বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৭০ শতাংশ।

এদিকে কোম্পানির মুনাফা প্রবৃদ্ধি ও বাজার মূলধন বৃদ্ধির সম্মিলিত বিবেচনায় সবচেয়ে ভাল অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ওষুধের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্কয়ার ও বেক্সিমকো ফার্মা যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের ছাড়পত্র পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরাও এ খাতে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

গত বছরের প্রথম নয় মাসে দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর উৎপাদন প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ওষুধ কোম্পানিগুলোর মুনাফায় গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ২০ শতাংশ। এ সময় ওষুধ ও রসায়ন খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে ২১ দশমিক ৯ শতাংশ, যা প্রাইস রিটার্নে খাতভিত্তিক সর্বোচ্চ। মুনাফায় প্রবৃদ্ধিতে ওষুধ-রসায়নের পরই রয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। এ খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, বাজার মূলধন বেড়েছে ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।

২০১৫ সালের প্রথম নয় মাসে অবকাঠামো-সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো বেশ পিছিয়ে থাকলেও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রকৌশল খাতভুক্ত ইস্পাত কোম্পানিগুলো। এদিকে জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে সবচেয়ে খারাপ করেছে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানিগুলো। প্রথম নয় মাসে এ খাতের মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৭ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে।

কাগজ ও মুদ্রণ খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমে ২০ দশমিক ৯০ শতাংশ, আবাসন ও সেবা খাতে ১৪ দশমিক ৫০, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতে ১৩ দশমিক ৯০, বস্ত্র খাতে ১৩ দশমিক ৮০, চামড়া শিল্পে ১২ দশমিক ৯০, বীমা খাতে ১০, টেলিযোগাযোগ খাতে ৮ দশমিক ৫০, সিমেন্ট খাতে ৮ দশমিক ২০ এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফা গড়ে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ হারে কমেছে। এর বাইরে জানুয়ারি- সেপ্টেম্বর সময়ে বিবিধ খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফাও কমেছে ১১ দশমিক ২ শতাংশ।