পুঁজিবাজারে আজ সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে লেনদেন। তবে সুচকের কিছুটা উধ্বুখী হলেও আতঙ্ক কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা আস্থাহীনতা থাকায় নতুন করে বিনিয়োগ করতে ভরসা পাচ্ছেন না। তাছাড়া বিনিয়োগকারীরা কয়েক বার নিটিং করেও লোকসানের প্রহর গুনছেন। আজ ২য় দিনের মতো উত্থানে বিরাজ করছে বাজার।

আজ লেনদেন শুরুতে নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হলেও ১৫ মিনিটি পর বাড়তে থাকে সূচক। দিনশেষে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকেও আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে লেনদেন। এর আগে ৫ দিন টানা পতনের পর সোমবার উভয় বাজারে সূচক বেড়েছিল। টানা দুই দিন সূচক বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের হতাশা কাটেনি। একাধিক বিনিয়োগকারীরা বলেন, বাজারে মাঝেমধ্যে সূচকের উত্থান হলেও বেশিরভাগ সময়েই বাজারে দরপতনের ঘটনা ঘটছে। এর ফলে বিনিয়োগে লোকসানের পাল্লাই ভারী হচ্ছে। ফলে নতুন বিনিয়োগে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কারণে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের পরিমাণও কমছে বলে বিনিয়োগকারীরা জানান। গতকাল বাজারে প্রকৌশল ও ওষুধ-রসায়ন খাতের বেশীরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে। পুঁজিবাজারের চলমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার গুজবে কান না দিয়ে কোম্পানিগুলোর সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।

বাজার গতিবিধির সম্পর্কেও বিনিয়োগকারীদের সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। এর পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যদি বিনিয়োগ করেন, তাহলে খুব বেশি মুনাফা না হলেও তাদেরকে লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে না বলে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

উত্তরা ব্যাংক সিকিউরিটিজের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না থাকায় নতুন বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে ভরসা পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট প্রকট। আস্থা সংকট কেটে গেলে বিনিয়োগকারীরা ফের বিনিয়োগমুখী হবে। গতকাল দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৫৫১ পয়েন্টে।

আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১০৯৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৭২৮ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩২২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৫টির, কমেছে ১১৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ার দর। যা টাকায় লেনদেন হয়েছে ৩২০ কোটি ৬১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এর আগে সোমবার ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৫৩৬ পয়েন্টে।

আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১০৯২ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৭২২ পয়েন্টে। ওইদিন লেনদেন হয় ২৯০ কোটি ৫২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। সে হিসেবে গতকাল ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা বা ১০.৩৬ শতাংশ।

এদিকে দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮৪৬৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৪২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৭টির, কমেছে ৮৬টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির। যা টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৮৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

শহিদুল ইসলাম