পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি লিবরা ইনফিউশন লিমিটেডের বন্ধক দেয়া সম্পত্তি নিলামে বিক্রির ঘোষণা দেয় আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক।  ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় অর্থঋণ আদালত আইন অনুযায়ী এ ঘোষনা দেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এর বিপরীতে লিবরা ইনফিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উচ্চ আদালতে রিট (রিট পিটিশন নং-১০১৭৪/২০১৫) করেন।  পরবর্তীতে রিটের শুনানি শেষে ৬ মাসের জন্য এ নিলাম স্থগিত করেন আদালত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। ১৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নিলামে লিবরা ইনফিউশনের রুপনগর শিল্প এলাকায় অবস্থিত ১৬৯ শতাংশ জমি ও জমির উপর একটি ৪ তলা ভবন (৫২ হাজার ৮৭৭ বর্গফুট),

একটি ৫ তলা ভবন (১৪ হাজার ৬৪০ বর্গফুট) ও একটি ৮তলা ভবন (এক লাখ ৮ হাজার ১৬ বর্গফুট) এবং কোম্পানির এসব ভবনে থাকা ২৭টি মেশিন ও ইক্যুইপমেন্ট বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১৯ অক্টোবর থেকে আগামী ৬ মাস পর্যন্ত নিলাম স্থগিত থাকবে।

জানা যায়, গত ১ অক্টোবর তারিখে ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ লিবরা ইনফিউশনের বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রির জন্য দেশের দুটি জাতীয় দৈনিকে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক।  কিন্তু কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রওশন আলম বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রির জন্য আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ডাকা নিলাম স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন।

এর প্রেক্ষিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে উচ্চ আদালত ৬ মাসের জন্য নিলাম স্থগিত করেন। ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক কম্পোজিট বিনিয়োগ সুবিধার আওতায় লিবরা ইনফিউশনকে ঋণ দেয়।

কিন্তু কোম্পানিটি ব্যাংক-কে ঋণের কোন কিস্তি পরিশোধ করেনি। পরিণতিতে ১৮ আগস্ট ২০১৫ তারিখ পর্যন্ত আসল, মুনাফা ও অন্যান্য চার্জসহ কোম্পানির কাছে আরোপিত কোন ক্ষতিপূরণ ছাড়াই ৮৭ কোটি ৪৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৩১ টাকা পাওনা রয়েছে ব্যাংকের।

তাই এই ঋণের বিপরীতে দেয়া বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ব্যাংক তার খেলাপি হয়ে যাওয়া ঋণ সমন্বয় করবে। তবে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হলে কোম্পানিটির ব্যবসায় ব্যাপক ধস নামবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর জন্য কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরাও পুঁজি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন।

এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, জুন ক্লোজিং এ কোম্পানিটির সম্পত্তি নিলামে বিক্রি হয়ে যাওয়ার খবরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত এ ১১ কার্যদিসে শেয়ারদর ১৬ শতাংশ পড়ে গেছে। কোম্পানিটির বর্তমান শেয়ারদর ৩৩০.৭ টাকা।

তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নীট মুনাফা করেছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২.১২ টাকা। তবে কোম্পানিটিতে বর্তমানে ১৯৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকার সঞ্চিতি রয়েছে বলে ডিএসই-তে দেখিয়েছে।

কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৪৮.২৮ শতাংশ উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে, ১৭.৩৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কাছে এবং ৩৪.৩৩ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে। কোম্পানিটি গত অর্থবছরে (২০১৩-২০১৪) বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

স্টাফ রিপোর্টার