স্টাফ রিপোর্টার: প্যারাগণ লেদার এ্যান্ড রুট ওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার সার্টিফিকেট নিয়ে প্রতারণা মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২ জন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠিত বিশেষ ট্রাইবুন্যালে জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম ১৯ আগস্ট নির্ধারণ করেছেন আদালত।

গত ৯ আগস্ট এ মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বাদী ও আসামি পক্ষের কেউ প্রস্তত না থাকায় সময়ের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন ও ১৩ আগস্ট মামলার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার যে দুজন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হয় তারা হলেন- সন্ধানী ক্রেডিট এ্যান্ড কো-অপারেটিভের ম্যানেজার মিজানুর রহমান ও চার্টার্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটির ডিএমডি সিরাজুল ইসলাম। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা করেন।

এদিকে সাক্ষী দিতে না আসায় আজিজুর রহমানের নামে ওয়ারেন্ট অব উইটনেস (ডব্লিউ ডব্লিউ) এবং জামিউল ইসলামের নামে সমন জারি করেছেন আদালত।

প্যারাগণ লেদারের শেয়ার জালিয়াতি নিয়ে কোম্পানিসহ ২০ জনকে আসামি করে ২০০২ সালে মামলা করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আসামিরা হল- এম এ সালাম, আবুল কালাম আজাদ, নূর মোহাম্মদ, আব্দুস সালাম, এস এস জুনায়েদ বাগদাদী, মো. কুতুবউদ্দিন, মো. আরব মিয়া,

আলী আহম্মেদ, মো. নূরুল আফসার, মো. কলিমউদ্দিন, মো. জালাল উদ্দিন, হেমন্ত বাইন, এবিএম মোরশেদুল হক, মো. সাইফুল্লা মিজান, শামসুল হাদী, মো. বশির আলম, মাহবুবুর, মাহবুবুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন ও প্যরাগণ লেদার এ্যান্ড রুট ওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

আসামিদের মধ্যে মাহবুবুর রহমান ও মোয়াজ্জেম হোসেন বৃহস্পতিবারে আদালতে হাজির থাকলেও তারা অনুপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিতিদের পলাতক হিসেবে দেখানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা খান বলেন, প্যারাগণ লেদার এ্যান্ড রুট ওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার প্রতারণা মামলায় আজকে সাক্ষীদের জবানবন্দী ও জেরা করা হয়েছে। আর বিচারের পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ১৯ আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, প্যারাগন লেদারের শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগের ভিত্তিতে বিএসইসি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে ওই কমিটি ২০০১ সালের ৩১ মে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামিগণ কোম্পানির শেয়ার জাল করার ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা রাখে। পরে এই জাল শেয়ার সার্টিফিকেট কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানিটির কিছু কর্মকর্তা ঋণের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দেয়।

আর ওইসব জাল শেয়ার সার্টিফিকেট ব্যাংকের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসে। শেষ পর্যন্ত ওইসব শেয়ার বাজারে এসে মারাত্মক বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করে এবং নির্দোষ বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাল শেয়ার গ্রহণ করা ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা আসামিগণের প্রত্যেকের জন্য প্রায় ২০ লাখ টাকা করে ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এ ছাড়া আসামিদের দুইজন জাল শেয়ার সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সন্ধানী ক্রেডিট এ্যান্ড কো-অপারেটিভ ও চার্টার্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি থেকে ঋণ গ্রহণ করে।

জানা যায়, কোম্পানিটি ওই সময় ৩ প্রকার শেয়ার ইস্যু করে। যা ইস্যু করার মতো আইনগত কোন ভিত্তি ছিল না। আর ফুজি বাংলা নামের কোরিয়ান কোম্পানি থেকে বিল্লি নামের একজনকে প্যারাগণ লেদারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক করার সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। কিন্তু এটি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হওয়া সত্ত্বেও গোপন করে কোম্পানিটি। আর এই তথ্য গোপন রেখে আসামিরা কোম্পানিটির শেয়ার ক্রয় করে স্বার্থ হাসিলের জন্য।