শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের তিন ব্যাংক সমাপ্ত অর্থবছরে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তিন ব্যাংকের মধ্যে দুই ব্যাংক পাঁচ বছরের মধ্যে সব্বোর্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের লভ্যাংশে ধস নেমেছে। ব্যাংক তিনটি হলো: পুবালী ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংক।

পূবালী ব্যাংক লিমিটেড : পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ২৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে ১২.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ১২.৫০ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড। তবে ব্যাংকটি গত ৫ বছরের মধ্যে সব্বোর্চ মুনাফা ও লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ টাকা ৭৬ পয়সা। আগের অর্থবছরের ইপিএস ছিল ৫ টাকা ৪৯ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ৩৩ পয়সা। আগামী ৫ জুন ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১২ মে।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি: শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। মুলত ব্যাংকটি গত ৮ বছরের মধ্যে সব্বোর্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে ব্যাংকটি ২০১৩ সালে সব্বোর্চ ১৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যমতে, সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ২২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ২২ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২১ টাকা ৩৮ পয়সা। আগামী ৩০ মে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৮ মে।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি: মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সমাপ্ত অর্থবছরে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ। তবে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৬৫ পয়সা। অথচ গতবছর একই সময়ে ইপিএস ছিলো ২ টাকা ১২ পয়সা।

মুলত ব্যাংকটির গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন মুনাফা করেছে। এর মধ্যে ব্যাংকটি ২০২২ সালে মুনাফা করে ২ টাকা ১৭ পয়সা, ২০২১ সালে মুনাফা করে ৩ টাকা ৪৬ পয়সা, ২০২০ সালে মুনাফা করে ২ টাকা ২৬ পয়সা, ২০১৯ সালে মুনাফা করে ২ টাকা ৩৭ পয়সা, ২০১৮ সালে মুনাফা করে ৩ টাকা ৫৯ পয়সা। যদিও গত পাঁচ বছরের মধ্যে সব্বোর্চ মুনাফা করে ২০১৮ সালে।

এদিকে কোম্পানিটির ২০২৩ সালের ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছিল ২.১১ টাকা। তবে বছর শেষে এই মুনাফার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১.৮৬ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেষ প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০.২৫ টাকা।

ডিএসই সুত্র জানা গেছে, কোম্পানিটির ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছিল ০.৬৩ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে ০.৭০ টাকা ও তৃতীয় প্রান্তিকে ০.৭৮ টাকা হয়েছিল। এতে করে ৩টি প্রান্তিকের একত্রে বা ৯ মাসে ইপিএস দেখায় ২.১১ টাকা।এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার ২০২৩ সালের পুরো বছরের যে আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে, সেখানে ইপিএস দেখিয়েছে ১.৮৬ টাকা। এ হিসাবে শেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে।

কোম্পানিটির ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি ২.১১ টাকা হিসেবে নিট মুনাফা হয়েছিল ২৩৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যা ১২ মাসে বা পুরো বছরে শেয়ারপ্রতি ১.৮৬ টাকা হিসেবে নেমে এসেছে ২০৫ কোটি ৮২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ শেষ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে ২৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

শেষ প্রান্তিকে লোকসানে কোম্পানিটির আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে মুনাফা কমেছে। আগের বছরে শেয়ারপ্রতি ২.১৭ টাকা করে নিট মুনাফা হয়েছিল ২৩৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। যা এ বছরে কমে হয়েছে ২০৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে ২৯ কোটি ২২ লাখ টাকার বা ১২ শতাংশ মুনাফা কমেছে। এতে করে আগের বছরের ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০২৩ সালের ব্যবসায় ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

কোম্পানিটির ২০২৩ সালের অর্জিত ২০৫ কোটি ৮২ লাখ টাকার নিট মুনাফার মধ্য থেকে ১০ শতাংশ হারে শেয়ারহোল্ডারদেরকে ১১০ কোটি ৬৬ লাখ টাকার নগদ বা মুনাফার ৫৪ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হবে। মুনাফার বাকি ৯৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা বা ৪৬ শতাংশ রিজার্ভে যোগ হবে।