শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বিনিয়োগকারীদের কোনরুপ গুজবে কান না দিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। একইসাথে বাজারের প্রতি আস্থা রাখার অনুরোধ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার সাম্প্রতিক পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত শীর্ষ ত্রিশ ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা ও মতবিনিময়কালে এ পরামর্শ দেন ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা আগের চেয়ে এখন অনেক ভাল। যার প্রতিফলন শিগগির শেয়ারবাজারে পড়বে বলে মনে করে ডিবিএ।

আলোচনায় অংশ নেয়া প্রতিনিধিরা সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। তারা মনে করেন, বাজার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার মত উল্লেখযোগ্য কোন কারন নেই। তবে কারো কারো মতে, শেয়ার দরের উপর থেকে ফ্লোর তুলে নিলে এমনিতেই কিছুটা প্রাইস এডজাস্টমেন্ট হয়ে থাকে। এটি অত্যান্ত স্বাভাবিক্। খুব শিগগির বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে বলে ইঙ্গিত করেছেন শীর্ষ এই ব্রোকার প্রতিনিধিরা।

আগামীদিনে বাজারের সার্বিক স্বার্থে উপস্থিত প্রতিনিধিরা ৭টি দাবী তুলেছেন, যা বাস্তবায়নের ফলে বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং বাজার দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল ও টেকসই হবে বলে আশা তাদের।

এসব দাবীর মধ্যে রয়েছে:  শেয়ারের দরে পুনরায় ফ্লোর আরোপ করা হতে পারে বলে বাজারে যে গুজবটি রয়েছে, তা শতভাগ গুজব, মিথ্যা, ভিত্তিহীন। ফ্লোর প্রাইসের পূনরাবৃ্ত্তি ঘটবে বলে ডিবিএ আদৌ মনে করেনা।

  • বর্তমান মর্জিন বিধিমালা-১৯৯৯ এর যুগোপযোগী ও সংস্কার প্রয়োজন।
  • ভালো কোম্পানির আইপিও বাজারে তালিকাভূ্ক্ত করতে হবে। কোম্পানি তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে সকল প্রকার আইন ও বিধি-বিধানের সঠিক পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
  • বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক নির্ভরতা কমাতে মিউচুয়াল ফান্ডের উপর জোর দিতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
  • কোম্পানির ক্যাটাগরি ডিভিডেন্ডের উপর না করে কোম্পানির ক্যাপিটাল সাইজের উপর করাই যৌক্তিক।
  • সাধারন শেয়ারহোল্ডার, স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার কিংবা অন্য কোন শেয়ারহোল্ডারদের না জানিয়ে ভিন্ন কোন উপায়ে কোন কোম্পানির শেয়ার বৃদ্ধি করা উচিৎ নয়।
  • দ্বৈত করের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তা সমাধান করতে হবে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী শীর্ষ বোকারেজ কোম্পানিগুলো হলো: লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ, সিটি ব্রোকারেজ, ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ, শেলটেক ব্রোকারেজ, শান্তা সিকিউরিটিজ, আইডিএলসি সিকিউরিটিজ, ইবিএল সিকিউরিটিজ, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোং, এমটিবি সিকিউরিটিজ, আইসিবি সিকউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিঃ, বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ, রয়েল ক্যাপিটাল, প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এনআরিবিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজ, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস লিঃ, গ্লোব সিকিউরিটিজ, এবি সিকিউরিটিজ, কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ এন্ড ইন্ভেস্টমেন্ট, ফার্স ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ, আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ, এনসিসিবি সিকিউরিটিজ এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিঃ, মিকা সিকিউরিটিজ, আকিজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ও প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিঃ।

বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ডিএসইর পরিচালক শরীফ আনোয়ার হোসেন, রিচার্ড ডি’ রোজারিও, ডিবিএর সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমাদ রশীদ লালী, বিএলআই সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, বেক্সিমকো সিকিউরিটিজের সিইও মোস্তফা জামানুল বাহার প্রমূখ। ডিবিএ প্রেসিডেন্ট বৈঠকে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাজারের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধ করেন।