শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে ডিভিডেন্ড ঘোষনাকে সামনে রেখে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি একটু বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে। এছাড়া আর্থিক বছর সম্পন্ন হওয়ায় ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দর পতনে একেবারে তলানিতে নেমে এসেছিল ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ার। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর অন্তর্নিহিত শক্তি সঞ্চিত হচ্ছিল এ খাতের শেয়ারে। অন্যদিকে সরকার পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ শুরু করছেন। এছাড়া সামনে ডিভিডেন্ড মৌসুম। তাই বিনিয়োগকারীরা ভাল ডিভিডেন্ডের আসায় নতুন করে ঝুঁকছেন।

এদিকে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ব্যাংক খাতে ১৭১ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক লেনদেন ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের হঠাৎ করে আগ্রহ বাড়ছে। আগ্রহ বাড়ার নেপথ্যে রয়েছে মুলত লভ্যঅংশ ইস্যু। ব্যাংক গুলো প্রতি বছর ভালো লভ্যাংশ দিয়ে আসছে।

এমনকি ব্যাংকের এফডিআরের চেয়ে অনেক ব্যাংক ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে বলে বিগত বছরগুলোর লভ্যাংশ বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র দেখা গেছে। তাছাড়া গত দুই সপ্তাহ ধরে পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতের শেয়ার লেনদেন ক্রমেই বাড়ছে। পাশাপাশি এ খাতের শেয়ারে ইতিবাচক রিটার্নও পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। খাতভিত্তিক শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাতের (পিই রেশিও) দিক দিয়েও ব্যাংক খাতের অবস্থান আকর্ষণীয় পর্যায়ে রয়েছে।

তথ্য অনুসারে, গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে রোববার ব্যাংক খাতে লেনদেন হয়েছে ৯৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার। এ খাতে সোমবার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, মঙ্গলবার ১৩১ কোটি ১৬ লাখ, বুধবার ১০৫ কোটি ৬৪ লাখ ও বৃহস্পতিবার ১৭১ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্যাংক খাতের বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৩২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ডিএসইর মোট লেনদেনে যার অবদান ১৬ শতাংশ।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহজুড়ে ব্যাংক খাতের শেয়ারের মুভমেন্টে গতি অনেক বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে শীর্ষ ২০ কোম্পানির তালিকায় উঠে এসেছে ২টি ব্যাংক। অন্যদিকে শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায়ও ব্যাংকের অবস্থান ছিল।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সম্ভাব্য লভ্যাংশ ঘোষণাকে সামনে থাকায় এ খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।

ব্যাংকগুলোর হিসাববছর ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ ভাগ থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ব্যাংকের লভ্যাংশের ঘোষণা আসতে থাকে। তাই এ সময়ে সাধারণত ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ে। এবছরও তার ব্যাতিক্রম নয়।

তথ্য মতে, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে এবি ব্যাংক পিএলসি’র শেয়ারের লেনদেন শুরু হয় ১০ টাকা ৯০ পয়সায়। এদিন শেয়ারটির ক্লোজিং মূল্য দাঁড়ায় ১১ টাকা ৯০ পয়সা। যা আগের দিনের চেয়ে ১ টাকা বা ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি। মূল্য বৃদ্ধির দিক দিয়ে এই ব্যাংকের অবস্থান ছিল নবম স্থানে। এদিন আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি’র শেয়ারের লেনদেন শুরু হয় ১৩ টাকায়। এদিন শেয়ারটির ক্লোজিং মূল্য দাঁড়ায় ১৪ টাকায়। যা আগের দিনের চেয়ে ১ টাকা বা ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি।

ডিএসইতে ব্যাংকটির ৬২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। আর ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারের লেনদেন শুরু হয় ২৮ টাকা ৯০ পয়সায়। এদিন শেয়ারটির ক্লোজিং মূল্য দাঁড়ায় ২৯ টাকা ৯০ পয়সায়। যা আগের দিনের চেয়ে ১ টাকা বা ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি।

এছাড়া শাহাজালার ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য ৬০ পয়সা বা ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৫০ পয়সা বা ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যমুনা ব্যাংকের ৫০ পয়সা বা ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৫০ পয়সা বা ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের ৫০ পয়সা বা ৪ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে।