শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রায় দেড় বছর পর পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হতেই মূল্যসূচকে দুইশত ১৫ পয়েন্ট সূচক উধাও হয়ে যায়। মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে শতাধিক কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম একদিনে যতটা কমা সম্ভব ততটাই কমে গেছে। এই সময়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মার্জিন ঋণ নেওয়া বিনিয়োগকারীরা এই সময়ে মুষড়ে পড়েন।

তবে বেলা যতোই বাড়ছিল, সুচকের পতন ততো নেমে আসছিল। এই সময়ে বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সক্রিয় হয়ে উঠে। ফলে বাজারে সেল প্রেসারের বিপরীতে বাই প্রেসার বাড়তে থাকে। পাশাপাশি সূচকের পতনের পরিমাণও কমতে থাকে। তবে দিনশেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ৯৬ পয়েন্ট সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসে ফেরা কোম্পানির শেয়ারদর আগামী এক-দুদিনও চাপে থাকেতে পারে। তবে সূচক পতনের পরিমাণ তেমন বড় কিছু হবে না। তাঁরা বলছেন, বড় বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের চাপের মুখেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহার করেছে। এখন বড় বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নিজেরাই বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে চাপের মুখে থাকবে। তাদের বাজার ঠিক রাখতে আরও সক্রিয় হতে হবে।

এছাড়া, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এতোদিন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রেও নির্লিপ্ত ছিলেন। এখন তারা তাদের অবস্থান ঠিক রাখার জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আনতে বেশি তৎপর হবেন-এমনটাই দাবি করেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইর সূত্র মতে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯৬.৫০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৪০ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৪.১২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭৪.১৬ পয়েন্টে। তবে ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে। এটি ৭.৪৭ পয়েন্টবেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৭.১৮ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইর শেয়ারদর কমেছে ২৯৬ টির বা ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচকের ৪৭৬.৯২ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইতে ৫৮৮ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আজ ডিএসইতে আগের দিন থেকে ৪৮ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার টাকার কম লেনদেন হয়েছে। বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৬৩৭ কোটি ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৯৬.৫০ পয়েন্ট বা ১.৫২ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৪০.২৫ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৪.১২ পয়েন্ট বা ১.০১ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭৪.১৬ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৭.৪৭ পয়েন্ট বা ০.৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৭.১৮ পয়েন্টে। আজ ডিএসইতে ৩৮৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৪টির, কমেছে ২৯৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির।

অপর পুঁজিবাজার সিএসই’র সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৭৬.৯২ পয়েন্ট বা ২.৫৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩২৯.৪৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪১টির, কমেছে ১৫৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১১৯টির।

দিন শেষে সিএসইতে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ৮ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার শেয়ার।