শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: বিভিন্নভাবে সুবিধাবাদী স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য বাজারকে গুজবের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে তোলে এবং বাজার থেকে ফায়দা লুটতে চায়। এর বাস্তব প্রমাণ বার বার দেখতে পেলাম। বাজারে এমন গুজব যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।ফলে গুজবের পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে বাজার মূলধন উধাও দুই হাজার ১৬৫ কোটি টাকা।

এদিকে সপ্তাহজুড়ে হ্যাকাররা একাধিক ব্যাংক হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করছে, প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে, সামনে রিজার্ভ কমে যেতে পারে, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছে এমন নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ায় গত সপ্তাহে পর পর দুই কার্যদিবস পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে অ্যাসেট ম্যানেজার ও ফান্ড ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থার বৈঠকের খবরে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়। তবে বড় উত্থান হলেও লেনদেন তিনশত কোটি টাকার নিচে লেনদেন হয়েছে।

অন্যদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা, গুমোট পরিস্থিতিতে চরম শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে আতঙ্ক ও শঙ্কার মাত্রা ততই বেড়েই চলছে। নতুন করে বিনিয়োগ করা দূরের কথা, বিনিয়োগকৃত অর্থেরই কোনো নিশ্চয়তা ও ভরসা পাচ্ছে না। বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কোনো পদক্ষেপই কাজে আসছে না বিনিয়োগাকারীদের আস্থা ফেরাতে। শুধু গত এক সপ্তাহেই দুই হাজার ১৬৫ কোটি টাকা বাজারমূলধন কমেছে।

বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৯ কোটি ৪৭ লাখ ১৪ হাজার টাকায়। যা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৫ কোটি ৯৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ২ কোটি ১৬৪ টাকা কমেছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ১ হাজার ৪৯০ কোটি ৩৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যার পরিমাণ আগের সপ্তাহে হয়েছিল ২ হাজার ৭১ কোটি ৪১ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ৫৮১ কোটি ৮ লাখ কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৫৮ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ২২১ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯১টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৭টির , কমেছে ১৩৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৯টির শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকার। যার পরিমাণ আগের সপ্তাহে ছিল ৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকার। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ৬৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৬৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৭টির দর বেড়েছে, ১০৬টির দর কমেছে এবং ১৩৪ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।