শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের পুঁজিবাজার। সেই সঙ্গে লেনদেন খরা প্রকট হয়ে উঠছে। ফলে পুঁজিবাজারের ভবিষ্যত নিয়ে দু:চিন্তায় পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন কী হচ্ছে পুঁজিবাজারে। ফলে দিন দিন পুঁজি নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে বাজারের প্রতি অনাস্থা দেখা দিয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।

তাই সবার মাঝে বাজার নিয়ে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। হঠাৎ এই আতঙ্কের কোনো কারণ বলতে পারছেন না বাজার সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ধারাবাহিক পতনে থাকায় বিনিয়োগকারীদের দিশেহারা অবস্থা। তারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।

আজ পুঁজিবাজারে নামমাত্রা কয়েকটি কোম্পানির দর বেড়েছে, তার চেয়ে প্রায় ৮ গুণ কোম্পানির দর কমেছে। কমেছে সব ধরনের সূচক ও লেনদেনের পরিমান। তবে হঠাৎ কেন পুঁজিবাজারের এই অস্থিরতা এর পেছনে তিন গুজবে দায়ী করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

মুলত এই চক্রটি এর আগেও ফ্লোর প্রাইস ইস্যুতে গুজব ছড়ায়, ফ্লোর প্রাইসের গুজব কাজে লাগাতে না পেরে এবার নতুন করে নানা গুজব ছড়াচ্ছে। এ বিষয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্রুত খতিয়ে দেখা উচিত। প্রথমত, পুঁজিবাজারে গত কয়েক দিন ধরে প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়।

দ্বিতীয়ত, আজ লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে হ্যাকাররা একাধিক ব্যাংক হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করছে। সেইসঙ্গে আরও গুজব ছড়ায়। ফলে দিনশেষে বড় দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। আতঙ্কে লেনদেনের শুরু থেকেই এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা হাতে থাকা শেয়ার লোকসানে বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে সেল প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় সূচকের বড় দরপতন হয়েছে।

তৃতীয়ত, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকেই আঙ্গুল তুলছেন কেউ কেউ। তেমনি রিজার্ভও কমে যাবে বলে বাজারে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তেমনি মিউচুয়াল ফান্ডে আমানতের উপর ‘উৎসে কর’ আরোপকেও বড় পতনের কারণ হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা।

মশিউর সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সকালে ব্রোকারেজ হাউসে আসার পরপরই গুঞ্জন শুনতে পাই একাধিক ব্যাংক হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। সেইসঙ্গে আরও গুঞ্জন ছড়ায় প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। এছাড়া রিজার্ভও কমে যাবে বলে বাজারে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। সবকিছু মিলেই সব থেকেই বাজারে বিক্রির বেশ চাপ ছিল।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে সবাই কম দামে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে গড়পড়তা সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে গেছে। দাম কমে যাওয়া দেখে আমিও লোকসানে কিছু শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছি।

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, আজ বাজারে যেভাবে পড়েছে, তাতে স্পষ্ট বিনিয়োগকারীরা প্যানিক হয়ে পড়েছে। প্যানিকে অনেকে বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ প্যানিকের পেছনে বিভিন্ন গুজব কাজ করতে পারে। মূলত বিনিয়োগকারীরা প্যানিক হয়ে বিক্রির চাপ বাড়ানোর কারণেই আজকের এ দরপতন। তাছাড়া বাজারে এমন দরপতন হওয়ার কোনো স্বাভাবিক কারণ নেই।