শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ও সূচক দুটিই বেড়েছে। সমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের তিন কার্যদিবস দরপতন হয়েছে। আলোচ্য সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বা দশমিক ৫০ শতাংশ। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্রে লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ৪ হাজার ৩৪১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৩ হাজার ৯২৬ কোটি টাকার। সেই হিসাবে সাপ্তাহিক লেনদেন বেড়েছে ৪১৫ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক গড়ে ৮৬৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৭৮৫ কোটি ২২ লাখ টাকার।

গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্কিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ৪৮০ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৬ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে। সূচকের উত্থানে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, লিন্ডে বাংলাদেশ, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ারের।

ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ২ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহশেষে যা ছিল ১ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে।

গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটির খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে ছিল সাধারণ বীমা খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ২ শতাংশ ছিল খাতটির দখলে। ১১ দশমিক ১ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। এ খাতের দখলে গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ১ শতাংশ রয়েছে।

৯ দশমিক ৮ শতাংশ নিয়ে তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। পরের অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের দখলেও ছিল মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের দখলে ছিল ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ৭ দশমিক ২ শতাংশ নিয়ে তালিকায় অষ্টম অবস্থানে ছিল ব্যাংক খাত।

এদিকে ডিএসইতে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে সাধারণ বীমা খাতে, ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। ৪ দশমিক ৫ শতাংশ নিয়ে পরের অবস্থানে রয়েছে সিরামিকস খাত। তৃতীয় অবস্থানে থাকা মিউচুয়াল ফান্ড খাত থেকে রিটার্ন এসেছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। আর ব্যাংক খাত থেকে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত থেকে দশমিক ৯, প্রকৌশল খাত থেকে দশমিক ৮, টেলিযোগাযোগ খাত থেকে দশমিক ৭ ও চামড়া খাত থেকে দশমিক ৬ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে গত সপ্তাহে।

অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নে গত সপ্তাহে শীর্ষ ছিল ভ্রমণ খাত। এ খাত থেকে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। ১ দশমিক ৪ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন নিয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তি খাত। এছাড়া পাট খাত থেকে ১ শতাংশ ও আর্থিক খাত থেকে দশমিক ৯ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে গত সপ্তাহে।

সমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকায়। যেখানে সপ্তাহের শুরুতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকায়। সে হিসাবে আলোচ্য সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বা দশমিক ৫০ শতাংশ। সমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০৬টির। কমেছে ১৫৭টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ২৬টির। লেনদেন হয়নি পাঁচটির।

অন্যদিকে সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়ে ১৯ হাজার ২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৮ হাজার ৮৯২ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহশেষে দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ৪১০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহশেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৩৩০ পয়েন্টে।

সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ১২৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে যেখানে লেনদেন হয়েছিল প্রায় ১১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৭টির, কমেছে ১৩২টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির।