শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সে ব্যাপক অনিয়ম চলছে। আর এ অনিয়মের কারনে ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে একবছরের বেশি সময় ধরে নিয়মিত পরিচালনা পর্ষদ নেই। বিমা খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠানটি প্রায় এক বছর ধরে চলেছে পরপর তিনজন প্রশাসকের নেতৃত্বে। চার মাস করে দায়িত্ব পালন করতে প্রশাসকদের নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। প্রথম দুজন তেমন কিছু করতে না পারায় তৃতীয় প্রশাসক বসানো হলো ১৩ অক্টোবর।

আইডিআরএর সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে প্রথম, সাবেক যুগ্ম সচিব মো. রফিকুল ইসলামকে দ্বিতীয় এবং আইডিআরএরই আরেক সাবেক সদস্য ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. কুদ্দুস খানকে তৃতীয় প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ১৯৯৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ডেল্টা লাইফের জীবন তহবিল রয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকা। কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী আড়াই হাজার। এর বাইরে সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে ২০ হাজার কর্মী রয়েছেন।

এদিকে বীমা খাতের কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রশাসকের ১১ মাসে আইনী খরচ হয়েছে কোটি টাকার বেশি। তবে কোম্পানিটির প্রশাসকের খরচ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ হতে অদ্যবধি অর্থাৎ প্রশাসকের ১১ মাস কালীন সময়ে শুধুমাত্র আইনী খরচ দেখিয়েছে কোটি টাকার বেশি। এ টাকায় বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে বলে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া যেসকল রীট মামলায় ডেল্টা লাইফ কোন পক্ষ নয় সেসকল মামলার খরচ দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

কেবলমাত্র প্রশাসকের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক দায়েরকৃত রীট নং ২০৯৩/২০২১ এর জন্যই ২১/১২/২০২১ হতে ১৩/০১/২০২২ পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র ২৩ দিনে বিভিন্ন আইনজীবীবির বিলের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

যদিও অত্র রীট মামলার পিটিশনার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ এবং রেসপন্ডেট বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। সুতরাং ঐ রীটের আইনী খরচ বাবদ প্রশাসক কোম্পানি থেকে যে টাকা উত্তোলন করেছেন তা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভুত বলে কোম্পানির সাবেক পরিচালনা পর্ষদ মনে করেন।

উল্লেখ্য যে, গত ৬ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে প্রশাসককে অবৈধ ঘোষণা করে রায় প্রদান করার পর বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সুপ্রীম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে সি.এম.পি নং ২১/২০২২ দাখিল করে এরপর ১০ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে বিনা প্রয়োজনে প্রশাসকও একটি সি.এম.পি নং ২২/২০২২ দাখিল করেন।

কিন্তু ১০ জানুয়ারি ঐ সি.এম.পি ২২/২০২২ শুনানী না হলেও ঐ সি.এম.পি-র শুনানী বাবদ গত ১২ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে একদিনেই বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। উক্ত আত্মসাতের সাথে কোম্পানির বর্তমান এক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং লিগ্যাল কনসালটেন্ট সহ কোম্পানির কতিপয় পথভ্রষ্ট কর্মকর্তা জড়িত। তবে আদালত কর্তৃক নতুন নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলির উপর স্থগিতাদেশ দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত অবাধে চলেছে নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি বাণিজ্য।