শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ১৪ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নামমাত্র লভ্যাংশ ঘোষণা করছে। বিনিয়োগকারীদের টাকায় কোম্পানিগুলো ব্যবসা করলেও বছর শেষে নামাত্রা লভ্যাংশ ঘোষণা করে বিনিয়োগকারীদের শান্তনা দিচ্ছে। অথচ এর চেয়ে ব্যাংকে টাকা রাখলে ভাল মুনাফা পাওয়া যায়।

ফার কেমিক্যাল: এই কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদেরকে ১ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি পাওয়া যাবে ১০ পয়সা করে। কোম্পানিটি আগের বছর মুনাফা থেকে এবার লোকসানিতে পরিণত হয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা ছিল ৩৩ পয়সা।

গোল্ডেন হার্ভেস্ট: খাদ্য খাতের কোম্পানিটি ৩ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ারে ৩০ পয়সা চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে ২ শতাংশ অর্থাৎ ২০ পয়সা দেয়া হয় অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ। সব মিলিয়ে লভ্যাংশ ৫০ পয়সা। কোম্পানিটি এবার শেয়ার প্রতি লোকসান করেছে ৭২ পয়সা। গত বছর শেয়ারে লোকসান ছিল ৮৫ পয়সা।

প্যাসিফিক ডেনিম: কোম্পানিটির আয় কমে অর্ধেক যাওয়ার পর লভ্যাংশও কমিয়েছে। আগের বছর ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানি গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা নগদ এবং ১ শতাংশ বোনাস, অর্থাৎ প্রতি ১০০টি শেয়ারে একটি শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত পিডিএলের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ৪৯ পয়সা।

অলিম্পিক একসেসোরিজ: টানা দ্বিতীয় বছর লোকসান দিল কোম্পানিটি। আগের বছর লভ্যাংশ না দিলেও এবার বিনিয়োগকারীদের জন্য ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি দেয়া হবে ১০ পয়সা করে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমাতে পেরেছে। এই সময়ে লোকসান হয়েছে ৩৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৫২ পয়সা।

মোজাফফর হোসেন স্পিনিং: তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত মুনাফায় থাকলেও বাজে চতুর্থ প্রান্তিকের কারণে অর্থবছর শেষে লোকসান হলো মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলসের। তবে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদেরকে পুরোপুরি হতাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রিজার্ভ থেকে ৩ শতাংশ নগদ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ৩০ পয়সা করে লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৫২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ১ টাকা ১৯ পয়সা।

বিডি অটোকার: কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদেরকে এবার ৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি পাওয়া যাবে ৪০ পয়সা করে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় করতে পেরেছে ৩৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৩৪ পয়সা।

সিমটেক্স: বস্ত্র খাতের এই কোম্পানিটির ৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি পাওয়া যাবে ৪০ পয়সা করে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় করতে পেরেছে ৯২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৫৬ পয়সা।

এডভেন্ট ফার্মা: আয় খুব একটা কমেনি কোম্পানিটির। তবে লভ্যাংশ কমিয়ে অর্ধেক করেছে কোম্পানিটি। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের ৪ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক, অর্থাৎ শেয়ারে ২০ পয়সা দেয়া হবে নগদ আর ২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রতি ১০০ শেয়ারে দুটি শেয়ার দেয়া হবে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ২৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির আয় ছিল ১ টাকা ২৮ পয়সা।

গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল: আগের বছরের তুলনায় আয় কিছুটা বাড়িয়ে গত দুই বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি দেয়া হবে ৫০ পয়সা করে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৩৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল ২৫ পয়সা।

ইনফরমেশন টেকনোলজি: কোম্পানিটি আগের বছরের তুলনায় আয় বাড়লেও লভ্যাংশ কমিয়েছে। আগের বছর শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ টাকা ১৬ পয়সা। সেখান থেকে শেয়ার প্রতি আয় ৩৮ পয়সা বাড়লেও লভ্যাংশ দিয়েছে ৫ শতাংশ বা শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটি ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশও দিয়েছিল।

এস কে ট্রিমস: এই কোম্পানিটিও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি পাবে ৫০ পয়সা করে। আগের বছর কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি দেড় টাকা লভ্যাংশ দিয়েছিল। কোম্পানিটির আয় কমেছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল ১ টাকা ৮২ পয়সা।

দেশ গার্মেন্টস: বস্ত্র খাতের এই কোম্পানিটিও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি পাবে ৫০ পয়সা করে। কোম্পানিটির আয় কমেছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল ৪২ পয়সা।

সাফকো স্পিনিং: লোকসান থেকে বেরিয়ে এসে কোম্পানিটি এবার ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পেরেছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি পাবেন ৫০ পয়সা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি কোম্পানিটি আয় করেছে ২৩ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৫ টাকা ৬৯ পয়সা ।

শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ: এই কোম্পানিটি নগদ ও বোনাস মিলিয়ে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে শেয়ার প্রতি ২৫ পয়সা দেয়া হবে নগদ, আর প্রতি ২০০ শেয়ারে ৫টি দেয়া হবে বোনাস। কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও এবার লোকসান দিয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ১৫ পয়সা।